Advertisement
E-Paper

স্ত্রীর মুখে অ্যাসিড ছুড়ল স্বামী

গুরুতর আহত অবস্থায় আপাতত কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (জেএনএম) তিনি ভর্তি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৮ ০১:১৪
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

খোলা বাজারে অ্যাসিড বিক্রির উপর সরকার বিধিনিষেধ আরোপ করলেও তাতে আখেরে যে কোনও লাভ হয়নি তা আরেক বার প্রমাণিত হল গত সোমবার হরিণঘাটায় একটি অ্যাসিড হামলার ঘটনায়। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে বাঁকসার বাসিন্দার কাওসার মণ্ডলের সঙ্গে স্ত্রী সেলিনা বিবি-র তুমুল বিবাদের সূত্রপাত। প্রায় প্রতিদিনই মদ্যপ অবস্থায় দিনমজুর কাওসার স্ত্রীকে মারধর করতেন। অত্যাচার সহ্য করতে না-পেরে অনেক বার বাপের বাড়িও চলে গিয়েছিলেন সেলিনা। সোমবার বিকেলে একই রকম ভাবে তাঁকে মারতে শুরু করেন কাওসার। তার পর বাড়িতে রাখা কার্বলিক অ্যাসিড স্ত্রীর মুখে ছুড়ে দিয়ে পালিয়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় আপাতত কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (জেএনএম) তিনি ভর্তি।

প্রশ্ন হল, অ্যাসিড যদি সহজে দোকানে কিনতে পাওয়া যায় তবে দুষ্কৃতীরা হাতে চাঁদ পেয়ে যাবেই। অ্যাসিড হামলায় লাগামও টানা যাবে না। দোকানে নিয়ম মেনে অ্যাসিড বিক্রি হচ্ছে কিনা তা দেখতে পুলিশ কতটা নজরদারি চালাচ্ছে জানতে চাওয়া হয়েছিল নদিয়ার পুলিশ সূপার রূপেশ কুমারের কাছে। তাঁর জবাব, ‘‘সালফিউরিক ও নাইট্রিক অ্যাসিড যাতে সহজলভ্য না-হয় তার জন্য যথাযথ নজরদারি রয়েছে। কিন্তু কার্বলিক অ্যাসিডের বিক্রির ক্ষেত্রে সরকার থেকেই নিষেধাজ্ঞা নেই। ফলে পুলিশ বাধা দিতে পারে না।’’

কেন কার্বলিক অ্যাসিডকে ছাড় দেওয়া হয়েছে? তাতে কি মানুষের শরীরে কোনও ক্ষতি হয় না? জেএনএম হাসপাতালের সুপার সুবিকাশ বিশ্বাস কিন্তু বলেন, ‘‘সালফিউরিক বা নাইট্রিক অ্যাসিডের মতো মারাত্মক না-হলেও কার্বলিক অ্যাসিডেও মানুষের টিস্যুতে গভীর ক্ষত হতে পারে।’’ প্রসঙ্গত, বছর খানেক আগে নদিয়ার হাঁসখালির এক স্কুল ছাত্রীকে অ্যাসিড ছোড়ে এক যুবক। বেশ কয়েক দিন লড়াইয়ের পর কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মারা যান ওই ছাত্রী। চলতি বছর জানুয়ারিতে আরতি মজুমদার নামে এক মহিলা তাঁর সতীনের ছোড়া অ্যাসিডে আক্রান্ত হয়ে শক্তিনগর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, সেলিনার ঘটনায় কাওসার বাড়ির কাছে একটি হার্ডওয়্যারের দোকান থেকে অ্যাসিড কিনেছিলেন। ঘটনার পর থেকে কাওসারের বাড়ির বাকি লোকজনও গা ঢাকা দিয়েছেন। সেলিনার বাবা তাঞ্জির মল্লিক জামাইয়ের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার পর মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে এসেছিলেন সেলিনার মা সুরাজি মণ্ডল। মেয়ের বিছানার পাশে বসে অঝোরে কেঁদে চলেছিলেন তিনি। আফশোস করছিলেন, ‘‘ জামাইকে বিশ্বাস করেই ভুল করলাম। মেয়েকে বাড়ি না- পাঠালে এমনটা হত না।’’

আসলে দিন কয়েক আগেই সেলিনা স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। সোমবার দুপুর নাগাদ কাওসার শ্বশুরবাড়়ি যান। আর কখনও মারধর করবেন না, এই মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেলিনাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। ওই দিন সন্ধ্যাতেই মারধর করে স্ত্রীর মুখে তিনি অ্যাসিড ছোড়েন বলে অভিযোগ।

Acid attack অ্যাসিড
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy