নতুন এই গাড়ির ভিতরে একসঙ্গে একাধিক মৃতদেহ রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। নিজস্ব চিত্র
করোনায় যাঁরা মারা যাচ্ছেন, শেষকৃত্যের জন্য তাঁদের কাচে ঢাকা গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কলকাতা পুরসভা সেই গাড়ির ব্যবস্থা করছে। হাসপাতাল থেকে প্লাস্টিকে মোড়া দেহ নিয়ে সরাসরি চলে যাওয়া হচ্ছে শ্মশানে বা কবরস্থানে। মৃতের কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না আত্মীয়দের।
পুরসভার একটি সূত্র জানাচ্ছে, এক-একটি গাড়িতে করে এক-এক জনের দেহ নিয়ে গিয়েও সময় মতো তা সৎকার করা যাচ্ছে না। ফলে, জমে যাচ্ছে মরদেহ। একটা গাড়ি একটি দেহ নামিয়ে ফিরে এসে আবার দেহ নিয়ে যাচ্ছে। কলকাতায় পুরসভার নিজের এবং বাইরের বিভিন্ন সংগঠনের মিলিয়ে পাঁচটি গাড়ি এই কাজ করছে। এর ফলে সব দেহ নিয়ে যাওয়ার সময় পাওয়া যাচ্ছে না। আবার একটি গাড়িকে টানা ২৪ ঘণ্টা ব্যবহারও করা যাচ্ছে না।
এই সমস্যার সমাধানে এ বার কলকাতায় একাধিক মরদেহবাহী নতুন গাড়ি এসেছে। কাচে নয়, পুরো ঢাকা এই গাড়িটিতে একসঙ্গে সাত জনের দেহ নিয়ে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে শ্মশান বা কবরখানায়। গাড়ির ভিতরে মাইনাস ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকছে। নিমতলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এই গাড়িটি কিনেছে। তারাই পুরসভার হয়ে এই কাজ করছে।
পুজো কমিটির তরফে দেবাশিস মোহান্ত জানিয়েছেন, ফোন পেলেই শহরের এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ঘুরে তাঁরা মরদেহ তুলে নিচ্ছেন গাড়িতে। তার পরে চলে যাচ্ছেন শ্মশান বা কবরখানায়।
‘প্রণাম’ নাম দেওয়া এই গাড়িটির ভিতরে কী আছে, তা বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই।
কিন্তু করোনা চলে গেলে গাড়িগুলির কী হবে?
আরও পড়ুন: বচসা থামাতে গিয়ে মৃত সিভিক পুলিশ, ধৃত তিন
দেবাশিস বলেন, “অজ্ঞাতপরিচয় যে দেহগুলি হাসপাতালে ও পুলিশ মর্গে জমে থাকে, সেগুলি সৎকারের দায়িত্বও আমাদের উপরে পড়েছে। এই গাড়িটি পরে সেই কাজেও ব্যবহার করা যাবে।” সম্প্রতি এই দাবিদারহীন দেহগুলি নিয়ে একটি শ্মশানে দাহ করতে যাওয়ার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে যায়। দেখা যায়, আঁকশি দিয়ে দেহগুলি টেনে নামানো হচ্ছে। এ নিয়ে নড়ে বসে পুর প্রশাসন। তার পরেই ঠিক হয়, এমন দাবিদারহীন দেহগুলিও কাচে ঢাকা গাড়ি করে নিয়ে যাওয়া হবে।
কলকাতা পুরসভার করোনা বিভাগের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মনিরুল মোল্লা। তিনি জানান, একসঙ্গে কখনওই তিন-চারটির বেশি শববাহী গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু কলকাতা নয়, বিধাননগর ও দুই ২৪ পরগনার হাসপাতাল থেকেও তাঁদেরই করোনায় মৃতদের দেহ নিয়ে গিয়ে সৎকার করতে হচ্ছে। ফলে চাপের মধ্যে নতুন এই গাড়িটি খুবই সাহায্য করবে। মনিরুল বলেন, ‘‘বিভিন্ন বিধায়ক ও সাংসদ তহবিল থেকে যাঁদের অ্যাম্বুল্যান্স বা শববাহী গাড়ি দেওয়া হয়েছিল, সেগুলিকেও ব্যবহার করার কথা ভাবা হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: নাগালমুক্ত প্রতারকেরা কি সক্রিয় অনলাইনে, ধন্দ
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy