Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জলে নামতে প্রমাণপত্র চাই রবীন্দ্র সরোবরে 

রবীন্দ্র সরোবরের পাবলিক পুলে প্রহরা। ফাইল চিত্র

রবীন্দ্র সরোবরের পাবলিক পুলে প্রহরা। ফাইল চিত্র

কৌশিক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৯ ০৩:০৯
Share: Save:

কলেজ স্কোয়ারে শিক্ষার্থী সাঁতারুর তলিয়ে যাওয়ার ঘটনার পরে রবীন্দ্র সরোবরের নিরাপত্তা জোরদার করতে তৎপর হল কেএমডিএ। এ বার সেখানে সুইমিং পুলে নামার আগেই কোনও ব্যক্তিকে প্রমাণ দিতে হবে যে, তিনি আদৌ সাঁতারু কি না। কেএমডিএ সূত্রের খবর, সুইমিং পুল টপকে কোনও অপটু সাঁতারু যাতে মূল সরোবরে ঝাঁপাতে না পারেন, তাই ওই ব্যবস্থা।

আধিকারিকেরা জানান, যিনি সাঁতার কাটতে আসবেন তাঁকে সাঁতারের অভিজ্ঞতার তথ্য দিতে হবে। স্থানীয় সাঁতারুরা, যাঁরা ওই পুলে বহু দিন ধরেই সাঁতার কাটেন, তাঁরা সুপারিশ করলে তবে নতুন সাঁতারু পুলে নামার সুযোগ পেতে পারেন। এমনকি, সাঁতার সংক্রান্ত কারও কোনও শংসাপত্র থাকলে তা নতুন সাঁতারুকে পুলের নিরাপত্তারক্ষীদেরও দেখাতে হবে।

রবিবার সকালে কলেজ স্কোয়ারে সাঁতার কাটতে গিয়ে আচমকাই সবার নজর এড়িয়ে গভীর জলে ঝাঁপ দেয় মহম্মদ শাহবাজ নামে এক কিশোর। পুলের জলে ডুবেই তার মৃত্যু হয়। কয়েক মাস আগে, একই ভাবে এক কিশোর রবীন্দ্র সরোবরে সুইমিং পুলের ঘেরা জায়গা পেরিয়ে সরোবরে সাঁতার কাটতে গিয়েই ডুবে মারা যায়।

কেএমডিএ-র এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কয়েক মাস আগেই ওই কিশোরের মৃত্যুর পরে সুইমিং পুলের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। তবে, সার্বিক ভাবে নিরাপত্তায় যাতে কোনও ফাঁক না থাকে, তার জন্য আরও নতুন কিছু পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ নিয়ে শীঘ্রই আলোচনা করা হবে।’’

রবীন্দ্র সরোবরে সাধারণ মানুষদের সাঁতার কাটার জন্য সেখানে জলাশয়ের মধ্যেই একটি অংশ ঘিরে আলাদা করে সাঁতারের পুল তৈরি করা রয়েছে। সেই অংশটি মূল জলাশয় থেকে আলাদা। কর্তৃপক্ষ জানান, স্থানীয় বাসিন্দা, যাঁরা সেখানে সাঁতার কাটতে যান, তাঁরা নিরাপত্তারক্ষীদের অনুমতি নিয়েই ওই ঘেরা অংশে প্রবেশ করেন। কেএমডিএ-র দাবি, ওই অংশে দুর্ঘটনার আশঙ্কা কম। কারণ সেখানে জলের গভীরতা সাড়ে চার ফুটের বেশি নয়। তা ছাড়া ওই পুলের মেঝে কংক্রিট দিয়ে বাঁধানো। জলের গভীরতা কম হওয়ায় ওই অংশটি সুরক্ষিত। তা ছাড়াও নিরাপত্তারক্ষীরা কোথাও কোনও বেচাল দেখলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেন বলে কেএমডিএ-র দাবি।

আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, পুলের ওই ঘেরা জায়গার বাইরে সরোবরের মূল জলাশয় নিয়েই ভয়। সেখানে জলের গভীরতা ১০ থেকে ১২ ফুট। সুইমিং পুল টপকে অনেকেরই মূল সরোবরে সাঁতার কাটতে যাওয়ার ঝোঁক থাকে। সেখানে সাঁতার কাটতে গেলে দক্ষ সাঁতারু না হলে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সাঁতারের সময়ে তাই সুইমিং পুলের প্রত্যেক সাঁতারুর উপরে নজর রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে ওই আধিকারিক জানান।

সরোবর সংরক্ষণের জন্য হাইকোর্ট মনোনীত বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেক দিন আগেই আমি কর্তৃপক্ষকে স্থানীয় সাঁতারুদের জন্য পরিচয়পত্র চালু করতে আবেদন করেছি।’’ ওই প্রস্তাব বিবেচনার মধ্যে রয়েছে বলে কেএমডিএ জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rabindra Sarobar Accident DEath KMDA ID Proof
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE