প্রতীকী চিত্র
শুধু কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গবেষণা সংস্থার ভুয়ো স্টিকার এবং বোর্ড লাগানো গাড়িই নয়। মাদক পাচারকারীরা পুলিশের চোখে ধুলো দিতে মাঝপথেই একাধিক বার বদলে ফেলেছিল গাড়ির নম্বর প্লেট। যে রাজ্যের মধ্যে দিয়ে যখন ওই গাড়ি যেত, তখন সেখানকার নম্বর প্লেট ব্যবহার করত তারা। লালবাজার জানিয়েছে, শনিবার কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর হাতে হাইড রোড থেকে গ্রেফতার হওয়া তিন মাদক পাচারকারীকে জেরা করে এমনই তথ্য মিলেছে। ধৃতদের থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছিল ৩৫২ কেজি গাঁজা। পাশাপাশি তাদের সঙ্গের গাড়িটি থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর ভুয়ো নম্বর প্লেট। ক্ষেত্র বিশেষে ওই ভুয়ো নম্বর প্লেট ব্যবহার করে পুলিশের নজর এড়িয়ে যেত পাচারকারীরা।
ব্যাঙ্কশাল আদালতের সরকারি কৌঁসুলি সাজ্জাদ আলি খান জানান, ধৃত রূপদেব লোহারা, মহাদেব ওরাওঁ এবং সুরেশ সোনিকে রবিবার আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারক তাদের ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসটিএফ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃতেরা প্রত্যেকেই রাঁচীর বাসিন্দা। তাদের প্রাথমিক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দারা জেনেছেন, মূলত জাতীয় সড়কগুলিতে টোল প্লাজার আগেই বদলে ফেলা হত গাড়ির নম্বর প্লেট। যার জন্য টোল প্লাজার সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়লেও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নম্বর প্লেট থাকায়
বিভ্রান্তিতে পড়ছিলেন তদন্তকারীরা। ওই বিভ্রান্তি বাড়িয়ে পুলিশের চোখ এড়ানোর জন্য গাড়ির বনেটে থাকত জাতীয় পতাকা। সেই সঙ্গে গাড়ির বাইরে লাগানো থাকত প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও-র নাম লেখা বোর্ডও।
কলকাতা পুলিশের এক তদন্তকারী অফিসার জানান, ধৃতেরা প্রয়োজন মতো পোশাকও বদল করত। গাড়ির মাঝে সুট-ব্লেজ়ার পরিয়ে এক জনকে উচ্চপদস্থ অফিসার সাজানো হত। গাড়ির সামনে চালকের পাশের আসনে যাকে বসানো হত, সে পরত নিরাপত্তারক্ষীর পোশাক। ধৃতেরা নিজেদের আসন বদল করলে পোশাকও বদলে যেত বলে দাবি পুলিশের।
লালবাজার জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা দফতরের নাম ব্যবহার এবং জাতীয় পতাকা লাগানো গাড়ি ব্যবহার করায় ধৃতদের বিরুদ্ধে মাদক আইনের পাশাপাশি ‘স্টেট এমব্লেম অফ ইন্ডিয়া অ্যাক্ট, ২০০৫’ ধারাতেও মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশের দাবি, জাতীয় পতাকার অপব্যবহারের জন্য মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ওই ধারায় মামলা দায়ের সাম্প্রতিক কালে হয়নি।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, প্রায় দশ বছর ধরে এই কায়দায় ধৃতেরা উত্তর ভারত থেকে মাদক নিয়ে আসত কলকাতায়। গত বছরের শেষ দিকেও তারা মাদক পৌঁছে দিয়েছিল শহরে। যা পরে এজেন্টদের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy