প্রতীকী ছবি।
আর্থিক অনিয়ম এবং প্রশাসনিক গোলমালের জেরে বারাসতের প্রিয়নাথ গার্লস স্কুলের পরিচালন সমিতি ভেঙে দিতে নির্দেশ দিল শিক্ষা দফতর।
প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ওই স্কুলের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা বিজয়া চন্দকে শো-কজ করেছে জেলা স্কুল শিক্ষা পরিদর্শকের দফতর। একই সঙ্গে বিজয়াদেবী এবং পরিচালন সমিতির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষা দফতরের শীর্ষ কর্তারা।
শিক্ষা দফতরের খবর, বহু শিক্ষিকার সার্ভিস বুকে বিজয়াদেবী নানা গরমিল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ। তার ফলে ওই শিক্ষিকারা চাকরি সংক্রান্ত অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন। তিনি অবসরগ্রহণের আগে বিষয়টি নজরে আসে। তা নিয়ে স্কুলের অন্দরে গোলমাল হয়। বিষয়টি নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক অন্তরা আচার্যের দ্বারস্থ হন কয়েক জন শিক্ষিকা। ৩০ নভেম্বর বিজয়াদেবীর অবসর গ্রহণের দিনও রাত পর্যন্ত স্কুলে গোলমাল চলে। বর্তমানে তন্দ্রা রায় নামে এক শিক্ষিকা প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব সামলালেও বিজয়াদেবী পুরোপুরি দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি। ফলে স্কুলের প্রশাসনিক পরিচালনের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে প্রশাসনের অন্দরে।
এমনিতেই নতুন যে আইন তৈরি হয়েছে তার ফলে পরিচালন সমিতির হাত থেকে অধিকাংশ ক্ষমতাই মধ্যশিক্ষা পর্ষদের হাতে চলে যাচ্ছে । তার পরে ওই সমিতি এবং প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় বিব্রত স্কুল শিক্ষা দফতর। স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, সার্ভিস বুক সংক্রান্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গিয়েই আরও কিছু অনিয়ম সামনে এসেছে। প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে একাধিক আর্থিক নয়ছয় এবং প্রশাসনিক বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে তিনি বহু টাকা অনুমোদন দিয়েছেন। সেই সব কাজের সময় নীরব থেকেছে পরিচালন সমিতি। ওই কর্তার কথায়, ‘‘বলা চলে প্রধান শিক্ষিকাকে প্রশ্রয়ই দিয়েছিল ওই সমিতি।’’ তিনি জানান, খবরটি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায় দফতরে। তার পরেই সরকারের শীর্ষ মহল থেকে দ্রুত পরিচালন সমিতি ভেঙ্গে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
শিক্ষা দফতরের একাংশের প্রশ্ন, প্রধান শিক্ষিকা অনিয়ম করলেও এত দিন কেন পরিচালন সমিতির সদস্যরা চুপ করে ছিলেন? তা হলে কি এ ব্যাপারে কোনও আঁতাঁত ছিল দু’পক্ষের? কেনই বা প্রধান শিক্ষিকার অবসরের ঠিক আগে এই বিষয়গুলি উঠে এল? এ ব্যাপারে বর্তমানে প্রধান শিক্ষিকার ভারপ্রাপ্ত এবং পরিচালন সমিতির সদস্য তন্দ্রা রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সদুত্তর মেলেনি। স্কুলের শিক্ষিকাদের তরফে জানানো হয়েছে, সার্ভিস বুকে গোলমাল নিয়ে তাঁরা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জানিয়েছেন। তাঁর দফতর থেকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে যেমন ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তেমনই বাদ পড়বেন না পরিচালন সমিতির কর্তারাও।’’ এ ব্যাপারে সদ্য প্রাক্তন হওয়া প্রধান শিক্ষিকা বিজয়া চন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএসেরও উত্তর দেননি তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy