Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পুজোয় মেট্রো-যাত্রা নিরাপদ রাখতে সুরক্ষার বেড়াজাল

মঙ্গলবারের ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে মেট্রো কর্তৃপক্ষের পরামর্শ, পুজোর সময়ে মেট্রোয় কোনও যাত্রী অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে সরাসরি হেল্পলাইন নম্বর ১৮২-তে ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারবেন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৩৯
Share: Save:

ভিড়ে ঠাসা মেট্রোয় মঙ্গলবার এক তরুণীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশের কাছে অভিযোগে ওই তরুণী আরও জানিয়েছিলেন, কামরার অন্য যাত্রীরা ঘটনাটি দেখেও কেউ প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসেননি। নিরুপায় হয়ে তিনি মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশনে নেমে পড়লে অভিযুক্ত দশ যুবক তাঁকে ধাওয়া করে। যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁদের কর্মীদের তৎপরতায় শেষমেশ ধরা পড়ে অভিযুক্তেরা। মেট্রো কর্তৃপক্ষই তাদের রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন। বুধবার অভিযুক্ত দশ যুবককে আলিপুর আদালতে তোলা হলে তাদের জামিনে মুক্তি দিয়েছেন বিচারক।

মঙ্গলবারের ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে মেট্রো কর্তৃপক্ষের পরামর্শ, পুজোর সময়ে মেট্রোয় কোনও যাত্রী অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে সরাসরি হেল্পলাইন নম্বর ১৮২-তে ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারবেন। মহিলারা ৯০০৭০৪১৯০৮ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারবেন। এ ছাড়াও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে ৯০০৭০৪১৭৮৯ নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে। মেট্রোকর্তাদের দাবি, সব ট্রেনের কামরায় রক্ষীর ব্যবস্থা করা না গেলেও সমস্ত স্টেশনে পর্যাপ্ত রক্ষী থাকবেন। সাদা পোশাকে থাকা বিশেষ বাহিনীর সদস্যেরাও নজরদারি চালাবেন বিভিন্ন ট্রেনে। যে কোনও প্রয়োজনে তাঁরাই দ্রুত পৌঁছবেন ত্রাতা হিসেবে।

পুজোর দিনগুলিতে বিশেষত মহিলাদের মেট্রো-যাত্রা সুরক্ষিত রাখতে কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন কর্তৃপক্ষ?

মেট্রোকর্তাদের দাবি, প্ল্যাটফর্মে ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি তাঁরাই সামলাবেন। এ জন্য প্ল্যাটফর্মে সিসি ক্যামেরা ছাড়াও প্রায় ৪৫০ রক্ষীকে দু’টি শিফটে একাধিক দলে ভাগ করে নিয়োগ করা হচ্ছে। আলাদা করে চিহ্নিত করা হয়েছে জনবহুল স্টেশনগুলি। কালীঘাট, রবীন্দ্র সদন, এসপ্লানেড, সেন্ট্রাল, দমদমে বাড়তি রক্ষী মোতায়েন করা হচ্ছে। পাশাপাশি কম্যান্ডো মোতায়েন থাকবে কালীঘাট এবং দমদমে।

এ ছাড়াও বাহিনীর দক্ষ কর্মীদের নিয়ে ‘কুইক রেসপন্স টিম’ (কিউআরটি) গড়া হয়েছে বলে মেট্রো সূত্রের খবর। হেল্পলাইন নম্বরে কোনও অভিযোগ এলে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট স্টেশন এবং কাছাকাছি থাকা ‘কিউআরটি’-কে জানানো হবে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যবস্থা নেবেন তাঁরা।

মেট্রো কর্তৃপক্ষ মানছেন, ভিড়ের সময়ে সব ট্রেনের কামরায় রক্ষী দেওয়া সম্ভব নয়। ভিড় ঠেলে তাঁদের পক্ষেও দ্রুত এক কামরা থেকে অন্য কামরায় যাওয়া অসুবিধাজনক। সে কারণেই সাদা পোশাকের রক্ষীরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে যাত্রীদের উপরে নজর রাখবেন। কোথাও আপত্তিকর কিছু দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পরের স্টেশনে কর্তব্যরত রক্ষীদের জানানো হবে। কোনও অভিযোগ পেলে নিকটতম স্টেশনে সেই কামরায় গিয়ে তল্লাশি চালাবেন মেট্রোর রক্ষীরা। অন্য দিকে, স্টেশন চত্বরের বাইরে নিরাপত্তা এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি দেখভাল করবে মেট্রো রেলপুলিশ।

তবে মেট্রোর কামরায় কেন সিসি ক্যামেরা নেই, সেই প্রশ্ন তুলছেন যাত্রীদের একাংশ। মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, পুরনো রেকে এই ব্যবস্থা না থাকলেও নতুন রেকগুলিতে ক্যামেরা থাকবে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর রেকে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। চালকের কামরা থেকে ওই ক্যামেরায় নজরদারি চালানো সম্ভব। মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্ল্যাটফর্মগুলিতে রক্ষী এবং সিসি ক্যামেরার পর্যাপ্ত নজরদারি থাকবে। তিনি বলেন, ‘‘সব যাত্রীকে বলছি, কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে দেরি না করে দ্রুত কর্তব্যরত আধিকারিককে জানান। যাতে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE