Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পথকুকুরের দাপটে অতিষ্ঠ বিধাননগরবাসী

সল্টলেকের বিভিন্ন এলাকায় পথকুকুরদের দাপটে রীতিমতো অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। ছোটদের পথেঘাটে একা ছাড়তেও ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকেরা।

সোমনাথ চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০০:৫৭
Share: Save:

রাতে রোগী দেখে বেরিয়েছেন চিকিৎসক। রাস্তায় পা দিতেই তেড়ে এল কয়েকটি কুকুর। হতভম্ব চিকিৎসক কিছু বুঝে ওঠার আগেই একটি কুকুর আঁচড়ে-কামড়ে জখম করে দিল তাঁকে। সম্প্রতি এই ঘটনা ঘটেছে সল্টলেকের ‘এ ই’ ব্লকে। তার পর থেকে রাতে রোগী দেখতে যাওয়া নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে থাকেন তিনি।

এটি বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা নয়। সল্টলেকের বিভিন্ন এলাকায় পথকুকুরদের দাপটে রীতিমতো অতিষ্ঠ বাসিন্দারা। ছোটদের পথেঘাটে একা ছাড়তেও ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকেরা। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, রাস্তায় কুকুরের সংখ্যা দিনদিন বাড়লেও তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। পুরসভার সেই পরিকাঠামোও নেই।

বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, রাস্তায় কুকুরের উপদ্রব ঠেকাতে তাদের আশ্রয়স্থল (ডগ পাউন্ড) তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। সেই ডগ পাউন্ড তৈরি হলে সমস্যা মিটবে। কিন্তু তার কাজ আপাতত স্থগিত রয়েছে। কবে তা আবার শুরু হবে, তার নিশ্চিত কোনও উত্তর নেই কারও কাছেই।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, পথকুকুরদের আশ্রয়স্থল তৈরি, চিকিৎসা করা এবং নির্বীজকরণের জন্য তারা এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে ই ই ব্লকের খালের ধারে একটি জমি দিয়েছিল। ওই সংস্থা এই ধরনের অসুস্থ কুকুরের চিকিৎসা এবং জন্ম নিয়ন্ত্রণের কাজ করে। সংস্থার কর্ণধার অরিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ই ই ব্লকে খালের ধারে ওই জমিতে একটি বাড়ি তৈরির প্রস্তুতি চলছে। পুরসভার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এখন কিছু করা যাবে না। ভোটপর্ব মিটলে ২৩ মে-র পর থেকে কাজ শুরু করতে হবে। তাই কাজ বন্ধ রয়েছে।’’ অরিজিৎবাবুও জানান, সল্টলেকের সব ব্লকেই কুকুরের দাপটে মানুষ নাজেহাল। বাসিন্দাদের অনেকেই নির্বীজকরণের কথা বলছেন। কিন্তু ডগ পাউন্ড না হলে চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না।’’

সল্টলেকের বি ই ব্লকের পুরনো বাসিন্দা অসিত মুখোপাধ্যায় এই সারমেয়কুলের দাপটে অতিষ্ঠ। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি ব্লকের গলিতে গলিতে কুকুরেরা ঘোরে। রাত ১০টার পরে ব্লকের ভিতরে ঢুকলেই কুকুরেরা তাড়া করে। মোটরসাইকেল নিয়ে গেলে পিছনে দৌড়য়। রীতিমতো প্রাণভয়ে রাতে বাড়ি ফিরতে হয়।’’

এ ই ব্লকের বাসিন্দা পিনাকী বসু নিজে কুকুরপ্রেমী। কিন্তু পথকুকুরদের দাপট তাঁকেও সমস্যায় ফেলে দিয়েছে। পিনাকীবাবু বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী অসুস্থ। এক চিকিৎসক-বন্ধু বৃহস্পতিবার রাতে আমার বাড়িতে এসেছিলেন। কয়েকটি রাস্তার কুকুর ওঁকে দেখে চিৎকার শুরু করে। একটি কুকুর পায়ে আঁচড়েও দেয়। ওই চিকিৎসক ভয় পেয়ে গিয়েছেন। রোগী দেখতে আসছেন না। তার ফলে আমি মুশকিলে পড়েছি।’’

বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘‘সল্টলেকে যে পথকুকুরের সংখ্যা বেড়েছে, তা ঠিক। আমরা পরিকাঠামোর উন্নয়ন করে বিষয়টির মোকাবিলা করার চেষ্টা করছি। একটি ডগ পাউন্ড তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nuisance Stray Dogs Bidhannagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE