নতুন উপাচার্যের পদে যোগ দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসংস্কৃতির উদ্দেশ্যে খোলা আকাশের বার্তা দিলেন সুরঞ্জন দাস। বৃহস্পতিবার যাদবপুরের নতুন উপাচার্য হিসেবে কর্মভার গ্রহণ করলেন তিনি।
যাদবপুরে তাঁর যোগদানের খবর অবশ্য নতুন কিছু ছিল না। বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই শিক্ষামহলে তাঁর নতুন কর্মভার নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেই চর্চায় ইন্ধন জুগিয়েছিল গত ১লা জুলাইে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক নিগ্রহের ঘটনা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপের অভিযোগে সেনেট হলে অবস্থানরত শিক্ষক শিক্ষাকর্মীদের নিগ্রহের নেতৃত্বে ছিল শাসক দলের ছাত্র সংগঠন। এই ঘটনায় উপাচার্যের প্রাথমিক বিবৃতি নিয়ে সরব হয়েছিল শিক্ষামহল। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার পরই অবশ্য ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। বলেন ‘‘এই ঘটনায় তিনি মর্মাহত’’।
গতকালই ‘সরকারের লোক’ হয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য রূপে যোগদান করেছেন সুগত মারজিত। আর ১৬ জুলাই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়েই সুরঞ্জনবাবু ঘোষণা করলেন, সমস্ত পড়ুয়া, গবেষক, আধিকারিক, শিক্ষক শিক্ষাকর্মীদের জন্য তাঁর ‘অবারিত দ্বার’। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা নাগাদ কাজে যোগ দিতে অরবিন্দ ভবনে প্রবেশ করেন তিনি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ঐতিহ্যের উ্ল্লেখ করে বলেন,‘‘ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সমাজ বিজ্ঞান—সবের সামঞ্জস্য ঘটিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটবে।’’ পাশাপাশি রামকৃষ্ণের কথা উল্লেখ করে মন্তব্য করেন, পিছন ফিরে না তাকিয়ে, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েই তিনি এগিয়ে চলবেন। অবশ্য যাদবপুর এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিকতম ইতিহাসে অস্থিরতার নিদর্শনের খামতি নেই। যাদবপুরের পড়ুয়াদের উপর পুলিশের লাঠিচার্যের বর্ষপূর্তির ঠিক দু’মাস আগে উপাচার্য হয়ে এলেন সুরঞ্জনবাবু। গতকালই শাসকদলের ছাত্রনেতা সৌরভ অধিকারীর প্রণাম ফিরিয়ে তাদের অধ্যাপকদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দেন নবনিযুক্ত উপাচার্য সুগতবাবু। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার কাজে যোগ দেওয়ার পরই টিএমসিপির প্রতিনিধিদল সুরঞ্জনবাবুর কাছে আসে সৌজন্য বিনিময়ের জন্য। উপাচার্যের সঙ্গে কিঞ্চিত্ বাক্যালাপও হয় তাদের। উল্লেখযোগ্যভাবে যাদবপুরের অন্য কোনও ছাত্রসংগঠনের তরফে কোনও সৌজন্য বার্তা এসে পৌঁছায়নি উপাচার্যের কাছে
নতুন পদের দায়িত্বে এসেই তার অফিসের ‘ইলেকট্রনিক’ দরজা, এবং সিসিটিভি ক্যামেরা খুলে ফেলার নির্দেশ দেন সুরঞ্জন দাস। ঠিক কী কারণে প্রাক্তন উপাচার্য অভিজিত্ চক্রবর্তীর আমলে বসানো সিসিটিভি খুলে ফেলার নির্দেশ দিলেন তিনি? উত্তরে সুরঞ্জনবাবু জানান, এইসবের তাঁর প্রয়োজন নেই। এই বিষয়ে যাদবপুরের রেজিস্টার প্রদীপকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘ এই সিদ্ধান্ত একেবারেই ওনার ব্যক্তিগত ব্যপার। আমাদের সেটা মানতেই হবে।’’ অভিজিত্ চক্রবর্তী অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চান নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy