চর্চা: নিউ টাউনে চলছে ফালুন দাফার প্রশিক্ষণ। নিজস্ব চিত্র
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শল্য চিকিৎসা বিভাগের প্রধান। তিনিই আবার এ রাজ্যে চিনা যোগাভ্যাসের প্রচারক! এমন দ্বৈত ভূমিকায় বিতর্ক হতে পারে, বিলক্ষণ জানেন ডাক্তারবাবু। তবুও ‘ফালুন দাফা’র উপকারিতা অস্বীকার করতে পারছেন না সরকারি মেডিক্যাল কলেজের বিভাগীয় প্রধান উৎপল বিট।
১৯৯২ সালে লি হোং জ়ি নামে এক ব্যক্তি ‘ফালুন দাফা’ পদ্ধতিতে যোগাভ্যাস প্রচলন করেন। অল্প সময়েই চিনে তা জনপ্রিয়তা পায়। ওই আধ্যাত্মিক গোষ্ঠীকে সরকার বিরোধী আখ্যা দেয় সে দেশের কমিউনিস্ট সরকার। গোষ্ঠীর ওয়েবসাইটে নিষেধাজ্ঞা জারির পাশাপাশি ইন্টারনেটে যাবতীয় প্রচারও নিষিদ্ধ করা হয়। তাতে আধ্যাত্মিক যোগাভ্যাসের প্রচার থামেনি। এ দেশেরও কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, হায়দরাবাদ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে এই যোগের প্রচলন রয়েছে।
সেই দলে নাম লিখিয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের বিভাগীয় প্রধান। নিউ টাউন বইমেলার পাশাপাশি চলতি বছরের কলকাতা বইমেলাতেও স্টল দিয়ে প্রচারের কাজ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু শল্য চিকিৎসক হওয়ায় এ ধরনের প্রচারে যুক্ত থাকার বিড়ম্বনাও তো রয়েছে? অস্বীকার করছেন না শিক্ষক-চিকিৎসক। তাঁর কথায়, ‘‘সমস্যায় পড়তে পারি বলে সতর্কও করেছেন অনেকে। আমার তিরিশ বছর ধরে হাঁপানি ছিল। হাঁটুর ব্যথার কারণে গাড়ি চালাতে পারতাম না। ফালুন দাফা শুরু করার পরে কিন্তু উপকার পেয়েছি।’’
নিজের এই বিশ্বাসকে সঙ্গী করেই প্রতি সপ্তাহে নিউ টাউনে আধ্যাত্মিক যোগাভ্যাস প্রচার এবং প্রশিক্ষণ ব্যস্ত থাকেন উৎপলবাবু। স্ত্রী রীতা বিট সে কাজে আক্ষরিক অর্থে সহধর্মিণী। শীতের সকালে যোগাভ্যাসের চর্চায় যোগ দিতে বেলেঘাটা থেকে আসেন ৮৮ বছরের সমীর মজুমদার, দেবজ্যোতি দাস কিংবা স্কুলপড়ুয়া রোহন পাত্রের মতো বিভিন্ন বয়সের মানুষ। সকলেরই দাবি, এই যোগে তাঁরা শারীরিক ও মানসিক ভাবে উপকৃত হয়েছেন।
যোগাভ্যাসের উপকারিতা প্রচারে জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারও। যদিও তা নিয়ে মূল স্রোতের চিকিৎসকদের প্রকাশ্যে মুখ খুলতে শোনা যায় না। সে ক্ষেত্রে উৎপলবাবু ব্যতিক্রম। তাঁর মন্তব্য, ‘‘যোগাভ্যাসে শারীরিক এবং মানসিক উন্নতি হলে ক্ষতি কোথায়? এর সঙ্গে চিকিৎসক পরিচয়ের সম্পর্ক নেই। ভিন্ন মত থাকতেই পারে। বিতর্কের উপাদান খোঁজা অনুচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy