প্রতীকী ছবি
করোনা পরীক্ষা করানোর তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট পাওয়ার কথা। অথচ এক যুবক দশ দিন পরে জানতে পারলেন, তিনি পজ়িটিভ। তাঁকে সশরীরে হাসপাতালে এসে রিপোর্ট নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ তুলেছেন ওই যুবক।
উল্টোডাঙার গৌরীবাড়ির বাসিন্দা ওই যুবকের অভিযোগ, তাঁর বন্ধু ২০ জুলাই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রিপোর্ট আনতে গেলে বলা হয়, তিনি যে আইডি (এসআরএফ) নম্বর দিচ্ছেন, তার সঙ্গে হাসপাতালের খাতায় লেখা আইডি নম্বর মিলছে না। অনেক অনুরোধ করেও রিপোর্ট না পাওয়ায় ফিরে আসেন ওই বন্ধু। পরে কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিকের পরামর্শে আক্রান্ত নিজেই মঙ্গলবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে জানতে পারেন, আইডি ভুল রয়েছে দাবি করে যে রিপোর্টটি সোমবার তাঁর বন্ধুকে দেওয়া হয়নি, সেটি আসলে তাঁরই।
দমকল দফতরের অস্থায়ী কর্মী ওই যুবক এখন সুস্থ থাকলেও কোভিড মোকাবিলায় সরকারি স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর খামতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ওই যুবক জানান, তিনি বৃদ্ধা মায়ের সঙ্গে থাকেন। গত ২ জুলাই থেকে করোনার উপসর্গ দেখা দেয় তাঁর। ৭ জুলাই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে তাঁর লালারসের নমুনা নেওয়া হয়। ওই যুবকের অভিযোগ, ‘‘তিন দিনেই রিপোর্ট পাওয়ার কথা। কিন্তু ১৭ জুলাই রাতে কলকাতা পুরসভার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক মোবাইলে ফোন করে জানান, রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। তার পরে শনি ও রবিবার থাকায় রিপোর্ট নিতে যাওয়া হয়নি। ২০ তারিখ আমার এক বন্ধু রিপোর্ট আনতে গেলে আইডি নম্বর না মেলায় রিপোর্ট দেওয়া হয়নি। ওই যুবকের আরও অভিযোগ, ‘‘২০ তারিখ রাতে ওই স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানালে তিনি বলেন, যে হেতু সুস্থ আছি, তাই আমিই হাসপাতালে গিয়ে রিপোর্ট নিতে পারব।’’ ওই যুবক জানান, সময় মতো রিপোর্ট না-পাওয়ায় এবং সুস্থ ছিলেন বলে তিনি এর মধ্যে দু’দিন কাজেও গিয়েছেন। নইলে অস্থায়ী কর্মী হওয়ার দরুণ তাঁর বেতন কেটে নেওয়া হত। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমার রিপোর্ট পজ়িটিভ জানা সত্ত্বেও পুরসভার ওই আধিকারিক কী ভাবে আমাকে সশরীরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন, তা বুঝতে পারছি না। আমি এখন সুস্থ থাকলেও দেহে করোনাভাইরাস সক্রিয় থাকতে পারে। পরবর্তী পরীক্ষার রিপোর্ট আসা অবধি আমি হোম কোয়রান্টিনে থাকছি।’’ প্রথম পরীক্ষার পরে ১৪ দিন পেরিয়ে যাওয়ায় ওই যুবক বুধবার ফের কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নমুনা দিয়ে গিয়েছেন।
কলকাতা পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওই স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবমাল্য সেনকে ফোন করা হলে তিনি এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘এখন ভয়াবহ সময়। এই রকম একটি ঘটনাকে বড় করে দেখা ঠিক নয়। তা ছাড়া, স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ অনুযায়ী আমাদের আধিকারিকেরা করোনা রোগীদের ফোন করেন। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতর বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলুন।’’ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘এটি একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা। ওই যুবকের করোনা রিপোর্ট পেতে এত দেরি কেন হল, তা খতিয়ে দেখা হবে। আগামী দিনে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy