থমকে: সমাবেশের জেরে যানজট। সার দিয়ে আটকে রয়েছে গাড়ি। শনিবার, শিয়ালদহে। ছবি: সুদীপ ঘোষ।
একে শনিবার, তার উপরে বাস-ট্যাক্সি নেই বললেই চলে। তবুও সকাল থেকে থমকে গেল শহরের বেশির ভাগ রাস্তার যান চলাচল। যদিও লালবাজারের দাবি, খুব কম সময়ের জন্যই যানজটে পড়তে হয়েছে শহরবাসীকে। তা-ও শুধু ধর্মতলা সংলগ্ন বিভিন্ন রাস্তায়। বেলা দুটো নাগাদ সমাবেশ শেষ হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই যান চলাচল স্বাভাবিক হতে থাকে। আমজনতার অভিজ্ঞতা অবশ্য বলছে, রীতিমতো ভোগান্তি হয়েছে বিকেল অবধি।
পুলিশ জানায়, এ দিন এসপ্ল্যানেড (ইস্ট), চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, জওহরলাল নেহরু রোডের বিভিন্ন জায়গায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় সকাল সাতটার পর থেকেই। সকাল আটটার পর থেকে শ্যামবাজার, হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন, হাজরা মোড়, গিরিশ পার্ক, কসবা থেকে তৃণমূল সমর্থকেরা বাস, গাড়ি কিংবা পায়ে হেঁটে স্ট্র্যান্ড রোড, মহাত্মা গাঁধী রোড, এ জে সি বসু রোড, এপিসি রো়ড, এস এন ব্যানার্জি রোড, জওহরলাল নেহরু রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড এবং আশুতোষ মুখার্জি রোড দিয়ে ধর্মতলা পৌঁছন। যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায় এস এন ব্যানার্জি রোড, লেনিন সরণি, জওহরলাল নেহরু রোড, এজেসি বসু রোডে। বেলা সাড়ে এগারোটার পর বন্ধ হয়ে যায় ডাফরিন রোড এবং মেয়ো রোডও।
স্মার্টফোনে অভ্যস্ত বাঙালি সকাল থেকেই চোখ রেখেছিল গুগল ম্যাপে। গুগল দেখিয়েছে, শহরের বেশির ভাগ রাস্তারই গতি ছিল কম। কোন কোন রাস্তা বন্ধ, কোথায় রাস্তা কার্যত স্তব্ধ সেই বার্তাও মিলেছে নিয়মিত।
দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়ানোর পরে টালিগঞ্জ থেকে কাশীপুর যেতে সরকারি বাস ধরেছিলেন ৬০ বছরের অমিতাভ দাস। কিন্তু পুলিশ ওই বাসের রুট রাসবিহারী অ্যাভিনিউ থেকে ঘুরিয়ে দেয় আলিপুরের দিকে। ফলে বাধ্য হয়ে মেট্রো ধরে গন্তব্যে পৌঁছন তিনি। একই ভাবে শ্যামবাজার থেকে মল্লিকবাজার যেতে গিয়ে ভুগতে হয়েছে অনিল রায়কে। শিয়ালদহ থেকে পরপর মিছিল আসায় প্রায় দেড় ঘণ্টা মৌলালি দিয়ে নিয়মিত গাড়ি চলাচল করতে পারেনি। এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে নাকাল হয়েছেন বহু রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা।
পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, গত বছর জেলা থেকে আসা বাস ভোরে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে দেওয়ায় সমস্যা হয়েছিল। তাই এ বছর ভোর চারটে থেকেই রাস্তায় নেমেছিলেন পুলিশ অফিসারেরা। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘এ বছর ২১ জুলাইয়ের পঁচিশ বছর পূর্তি। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন। ভিড় বেশি হবে আঁচ করেই পরিকল্পনা হয়েছিল।’’ ওই পুলিশকর্তার দাবি, সকাল সাতটা থেকেই সমাবেশ মঞ্চের সামনে ভিড় বাড়তে শুরু করে। আসতে থাকে কয়েক হাজার বাস-গাড়ি। তা সত্ত্বেও রাস্তা যাতে পুরোপুরি বন্ধ না হয়, তা নিশ্চিত করা হয়েছিল। পার্ক স্ট্রিট-মেয়ো রোড-ডাফরিন রোড দিয়ে গাড়ির মিছিলের মধ্যেই যাত্রিবাহী বাস চালিয়েছে ট্র্যাফিক পুলিশ।
পুলিশের মতে, গা়ড়ি করে বেশি লোক আসায় সমাবেশ শেষ হতেই দ্রুত শহর খালি হতে শুরু করে। ভিড় পাতলা হতেই গা়ড়ি চলাচলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ফেরার পথে একটি বাস বিদ্যাসাগর সেতুতে খারাপ হয়ে গেল এজেসি বসু রোড, বিদ্যাসাগর সেতুতে যানজট হয়। ওই সমস্যাও দ্রুত সামাল দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy