দু’মাসের মধ্যে সিঁথিতে ফের চুরির ঘটনা ঘটল। গত ৩ জুলাই সিঁথির কালীচরণ ঘোষ রোডে এক বৃদ্ধ দম্পতির বাড়ি থেকে টাকা, গয়না-সহ বহু সামগ্রী চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার গভীর রাতে দ্বিতীয় চুরির ঘটনাটি ঘটেছে সেন্টার সিঁথি রোডে। ঘটনাস্থল থেকে সিঁথি থানার দূরত্ব এক কিলোমিটার। এমনকী ৩ জুলাই কালীচরণ ঘোষ রোডের যে বাড়িতে চুরি হয়েছিল, তার থেকে সেন্টার সিঁথি রোডের বাড়িটির দূরত্ব মেরেকেটে ৫০০ মিটার। এলাকায় বারবার চুরি হওয়ায় পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কী ঘটেছিল মঙ্গলবার রাতে? পুলিশ সূত্রে খবর, পেশায় কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী বিমান চট্টোপাধ্যায় স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সেন্টার সিঁথি রোডে একটি দোতলা বাড়িতে থাকেন। ওই রাতে সাড়ে ১২টা নাগাদ একতলায় খাওয়াদাওয়া সেরে দোতলায় ঘুমোতে যান তাঁরা। পাশাপাশি দু’টি ঘরে ছেলে, মেয়ে থাকায় তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিমানবাবু ও তাঁর স্ত্রী রোজকার মতো ঘরের দরজা খুলেই ঘুমোচ্ছিলেন। বিমানবাবুর স্ত্রী গার্গীদেবী বলেন, ‘‘ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে দেখি, দরজা বন্ধ। বাইরে থেকে হুড়কো দেওয়া। পাশের ঘরে ছেলেকে ডাকায় সে দরজা খুলে দেয়।’’
বিমানবাবু জানিয়েছেন, দোতলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে নামার পথে দু’টি দরজা আছে। একতলায় নামার সময়ে তিনি দেখেন, একটি দরজা বাইরে থেকে হুড়কো দিয়ে বন্ধ। তখন একতলা থেকে বাইরে যাওয়ার বিকল্প দরজা খুলে বিমানবাবু গিয়ে দেখেন, রান্নাঘরের গ্রিল ভাঙা। সেখান দিয়েই রান্নাঘরের মধ্যে দিয়ে একতলায় যান তিনি।
বিমানবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, একতলায় গিয়ে দেখা যায়, সমস্ত কিছু লণ্ডভণ্ড। তিনটি দামি মোবাইল, টাকা-সহ বহু জিনিস উধাও। ঘরের আলমারি ভারী কিছু দিয়ে ভাঙার চেষ্টা করা হলেও তা শেষমেশ ভাঙতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। কিন্তু আলমারির হাতল পুরোটাই তোবড়ানো।
সঙ্গে সঙ্গে সিঁথি থানায় খবর দেন বিমানবাবু। তিনি বলেন, ‘‘১৯ বছর ধরে এখানে আছি। এমন ঘটনা এই প্রথম। রীতিমতো আতঙ্কে আছি।’’ বিমানবাবুর স্ত্রী গার্গীদেবীর কথায়, ‘‘খোওয়া যাওয়া সামগ্রীর মূল্য টাকার অঙ্কে খুব বেশি না হলেও দুষ্কৃতীরা যে কায়দায় রান্নাঘরের গ্রিল ভেঙে বাড়িতে ঢুকে তছনছ করেছে, তাতে এখানে থাকতেই ভয় করছে।’’
থানার কাছাকাছি বারবার চুরির ঘটনা ঘটায় এলাকাবাসীরা পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, রাতে পুলিশের কড়া নজরদারি ও টহল থাকলে এই ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটার কথা নয়। যদিও পুলিশের দাবি, রাতে নিয়মিত টহলদারি চলে। সিঁথিতে বারবার চুরির ঘটনা প্রসঙ্গে ডিসি (উত্তর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। এর বেশি কিছু মন্তব্য করব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy