Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

আড়াই বছরের মেয়েকে খুনে যাবজ্জীবন মায়ের

সরকারি কৌঁসুলি অসীম কুমার জানান, গত বছরের ৩১ অগস্ট উল্টোডাঙা থানা এলাকার শ্যামলাল স্ট্রিটের ম্যানহোল থেকে আড়াই বছরের জবা দাসের মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:১১
Share: Save:

শিশুকন্যাকে শ্বাসরোধ করে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া মাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল শিয়ালদহ আদালত। শুক্রবার বিচারক নীলাময় মণ্ডল ওই রায় দেন।

সরকারি কৌঁসুলি অসীম কুমার জানান, গত বছরের ৩১ অগস্ট উল্টোডাঙা থানা এলাকার শ্যামলাল স্ট্রিটের ম্যানহোল থেকে আড়াই বছরের জবা দাসের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। জবা ও তার মা মণি দাস দেশবন্ধু পার্কের সামনে একটি ঝুপড়িতে থাকত। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, বছর তেইশের ওই তরুণী স্বামী-বিচ্ছিন্না। তার সঙ্গে শ্যামবাজার মেট্রো স্টেশন লাগোয়া ফুটপাতের বাসিন্দা এক কিশোরের ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। বছর সতেরোর ওই কিশোরকে বিয়ে করতে চেয়েছিল মণি। কিন্তু ছেলেটি প্রস্তাব দেয়, জবাকে মেরে ফেললে তবেই সে মণিকে বিয়ে করতে পারে।

গত বছরের ৩১ অগস্ট সকালে মণি উল্টোডাঙা থানায় গিয়ে জানায়, তার মেয়েকে কেউ অপহরণ করেছে। দুপুরে শ্যামলাল স্ট্রিটের এক বাসিন্দা থানায় জনান, তিনি পাড়ার ম্যানহোলে একটি শিশুর দেহ দেখতে পেয়েছেন। পুলিশ সন্ধ্যায় ম্যানহোল থেকে জবার দেহ উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ময়না-তদন্ত করায় এবং চিকিৎসকদের কাছ থেকে জানতে পারে, শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। মণিকে মর্গে নিয়ে তার সন্তানকে শনাক্ত করায় পুলিশ।

খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ তিন জনের হদিস পায়। প্রথম জন গণেশপ্রসাদ সাউ নামে এক মাছ বিক্রেতা। তিনি ৩০ অগস্ট রাত আড়াইটে নাগাদ সাইকেলে চেপে বৈঠকখানা বাজারে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। গণেশ রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিটে মণিকে একটি শিশু কোলে নিয়ে এক কিশোরের সঙ্গে ঘুরতে দেখেছিলেন। দ্বিতীয় জন পাপ্পু সাউ নামে এক যুবক। তাঁর মা সেই সময়ে আর জি করে ভর্তি ছিলেন। তিনি দীনেন্দ্র স্ট্রিটের একটি ওষুধের দোকান থেকে মায়ের ওষুধ কিনতে বেরিয়েছিলেন। তিনিও মণি ও সেই কিশোরকে শ্যামলাল স্ট্রিটে ঘোরাফেরা করতে দেখেন। তৃতীয় জন শ্যামবাজার মেট্রো স্টেশনের সামনের ফুটপাতের বাসিন্দা, বছর চোদ্দোর বিনোদ সর্দার। তার সামনেই জবাকে খুন করার প্রস্তাব দিয়েছিল তার প্রেমিক। বিনোদ তার প্রতিবাদ করায় ওই কিশোর তাকে চড়-থাপ্পড় মেরে তাড়িয়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ।

এই মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট ওই তিন জনেরই গোপন জবানবন্দি নিয়েছিলেন ও মামলার প্রধান সাক্ষীও করা হয়েছিল ওই তিন জনকে। ঘটনার সময়ে মণির প্রেমিক নাবালক থাকায় জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে তার বিচার চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Life Term
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE