Advertisement
১০ মে ২০২৪

সন্তানের মৃত্যুতে অভিযুক্ত মা

পিয়াসা সরকার

পিয়াসা সরকার

নিজস্ব সংবাদদাতা 
ক্যানিং শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২০ ০২:১০
Share: Save:

বছর দশেকের মেয়ের মৃত্যুতে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ উঠল মায়ের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিংয়ের গোরস্থানঘেরি এলাকায়। মৃতের নাম পিয়াসা সরকার ওরফে পাখি। ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে তার মা পদ্ম ওরফে পায়েলের বিরুদ্ধে।

পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রের খবর, পিয়াসার বাবা প্রিয়রঞ্জন কর্মসূত্রে বাঁকুড়ায় থাকেন। মায়ের সঙ্গে পিয়াসা ক্যানিংয়ের বাড়িতেই থাকত। অভিযোগ, দিনের পর দিন একরত্তি মেয়েটিকে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত তার মা। পড়াশোনা না পারলে বেধড়ক মারধর চলত। বাড়ির সমস্ত কাজ ছোট মেয়েটিকে দিয়ে করানোর অভিযোগ ছিল মায়ের বিরুদ্ধে। পড়শিদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, পদ্মর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। প্রতিবেশী, নিকট আত্মীয়েরা প্রতিবাদ করলেও অত্যাচার থামেনি। মায়ের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক জেনে যাওয়ার ফলে মেয়ের উপরে অত্যাচার বেড়েছিল বলে অভিযোগ পিয়াসার জেঠু, কাকিমাদের।

অভিযোগ, শনিবার সন্ধ্যায় মেয়েকে বেধড়ক মারধর করে মা। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে মেয়েটি। জানতে পেরে পিয়াসাকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান পড়শিরা। সেখানেই মৃত্যু হয় পিয়াসার। এরপরেই প্রতিবেশী ও নিকট আত্মীয়েরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। হাসপাতালের মধ্যেই পদ্মকে ঘিরে ধরেন সকলে। উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরে। খবর পেয়ে ক্যানিং থানার পুলিশ গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে জনতাকে সরিয়ে দেয়। শিশুটির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। মেয়েটি সারা গায়ে আঘাতের চিহ্ন ও কালসিটে দাগ রয়েছে বলে পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর।

পদ্ম অবশ্য বলে, ‘‘তিন মাস আগেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিল মেয়ে। তখন কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ও অসুস্থই ছিল, ওষুধ চলছিল। এ দিন বাথরুমে গিয়ে পড়ে আঘাত পায়। তার ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে।”

যদিও পিয়াসার জেঠু বাচ্চু সরকার, কাকিমা মিঠু সরকার-সহ পরিবারের সদস্যেরা বলেন, ‘‘মেয়েকে আমাদের কারও সাথে মিশতে দিত না ওর মা। এক বান্ধবী ও তার স্বামীর সঙ্গে মিশেই ছোট মেয়েটার উপরে অত্যাচার করত।’’

পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করে তদন্ত শুরু করেছে। অন্য দিকে, নিজের স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে ক্যানিং থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন পিয়াসার বাবা প্রিয়রঞ্জন।

স্ত্রী, তার বান্ধবী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্য-সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে ক্যানিং থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রিয়রঞ্জন। তিনি বলেন, ‘‘দিনের পর দিন মেয়ের উপরে অত্যাচারের প্রতিবাদ করেছি। কোনও লাভ হয়নি। মেয়েটাকে মেরেই ফেলল ওরা সকলে মিলে। ওদের শাস্তি চাই।”

ক্যানিং থানার পুলিশ অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE