Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ভেজাল সর্ষেতেও, তিলে মেশানো হত পোড়া মোবিলও, গ্রেফতার ১

খাবার তেল হিসাবে তিল তেলের চাহিদা বাড়ছে। তিল দিয়ে তৈরি নাড়ু, খাজা-সহ নানা মুখরোচক খাবার তৈরি হয়। প্রসাধনী শিল্পেও তিলের ব্যবহার আছে।

ধৃত সুশীল বাইন।—নিজস্ব চিত্র

ধৃত সুশীল বাইন।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গাইঘাটা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:১৩
Share: Save:

ভেজাল তিল ও সর্ষে তৈরির চক্রের হদিস পেল গাইঘাটা থানার পুলিশ। রবিবার দুপুরে স্থানীয় মনমোহনপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের পান্ডাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম সুশীল বাইন। সোমবার তাকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, বাড়িতেই ছিল গুদাম। সেটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। ১০ বস্তা ভেজাল তিল আটক করা হয়েছে। প্রতিটি বস্তায় ২৫ কেজি করে তিল ছিল। দেড়শো কেজি ভেজাল সর্ষে, পাম অয়েল, রেড অক্সাইড, পোড়া মোবিল-সহ বিভিন্ন রাসায়নিকও বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে সুশীলের গুদামে ভেজাল মালপত্র রাখা হত। লোকজনের সন্দেহ হলেও এলাকায় সুশীলের প্রভাব-প্রতিপত্তি থাকায় কেউ কিছু বলতে সাহস করেননি।

আটক: ভেজাল তিল-সর্ষে। —নিজস্ব চিত্র

কী ভাবে চলত ভেজালের কারবার?

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, পাইকারি হারে লাল তিল কিনত সুশীল। তার মধ্যে ভুষি, কালি, পোড়া মোবিল ও বিভিন্ন রাসায়নিক মিশিয়ে তা কালো করা হত। তিলের মধ্যে বালির দানায় কালো রঙ করে তা-ও মেশানো হত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

একই ভাবে বাজার থেকে সস্তায় পচা, ছাতা-ধরা সাদা সর্ষে কিনত সুশীল। তাতে পামতেল, রেড অক্সাইড, রাসায়নিক মিশিয়ে উজ্জ্বল লালচে রঙের করা হত। পরে তা বিক্রি করা হত বেশি দামে। ভেজাল তিল ও সর্ষে কলকাতার বাজারে পাঠাত সুশীল। তা দিয়ে তৈরি হত খাবার তেল। পুলিশ জানিয়েছে, এক কেজি লাল তিলের দাম ২৫ টাকা, কিন্তু কালো তিলের দাম ৫০-৫৫ টাকা।

খাবার তেল হিসাবে তিল তেলের চাহিদা বাড়ছে। তিল দিয়ে তৈরি নাড়ু, খাজা-সহ নানা মুখরোচক খাবার তৈরি হয়। প্রসাধনী শিল্পেও তিলের ব্যবহার আছে। বাতের ব্যথায় তিল তেলের মালিশ করেন অনেকে। শিশুদেরও মাখানো হয়।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বেশি লাভের আশায় সুশীল ভেজাল তিল তৈরি করে কারবার চালাচ্ছিল। সর্ষের তেলে ভেজাল বনগাঁ গাইঘাটা গোপালনগরে নতুন কোনও ঘটনা নয়। আগেও পুলিশ তার হদিস পেয়েছে। কয়েক জন গ্রেফতার হলেও কারবার বন্ধ হয়নি। মনমোহনপুরের ঘটনার পরে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ।

কিছু দিন আগে নদিয়াতেও ডাল, তিল, ঘিয়ের মতো নানা খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল ধরা পড়ে। গ্রেফতার হয় কয়েক জন। বনগাঁর ঘটনা দেখিয়ে দিচ্ছে, ভেজাল চক্র কী ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে জেলায় জেলায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gaighata Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE