ফাইল চিত্র।
হঠাৎ কী এমন হল আকাশে, চিন্তিত বনগাঁ!
মুহুর্মুহু বজ্রপাতে ভয়ে কাঁপছেন শহরবাসী। গ্রামের দিকে তো আতঙ্ক আরও ছড়িয়েছে। বৃষ্টি নামলে খেতে কাজ করতে যেতে চাইছেন না শ্রমিক-চাষি। দিন কয়েক আগেই কেউটিপাড়ায় মাঠে কাজ করতে গিয়ে বাজ পড়ে মারা গিয়েছেন এক চাষি। জখম হন এক খেতমজুর। ওই দিন সকাল থেকে বনগাঁয় পরের পর বাজ পড়েছিল বলে জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
আতঙ্কটা এতই জাঁকিয়ে বসেছে, আকাশে মেঘ করলেই চাষি ও খেতমজুররা গত কয়েক দিন ধরে ঘরমুখো হচ্ছেন বলে জানা গেল। কিন্তু তাতে টান পড়ছে রোজগারে।
মণিগ্রামে এক চাষির খেতে কাজ করতে গিয়ে গিয়েছিলেন মনিমোহন বিশ্বাস-সহ ১২ জন শ্রমিক। সকাল ৬টা থেকে তাঁরা পাট খেতের আগাছা তোলার কাজ করছিলেন। সকাল ৮টা নাগাদ হঠাৎ আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢেকে যায়। শুরু হয় হালকা বৃষ্টি ও মেঘের গর্জন। চলতে থাকে বিদ্যুতের ঝলকানি ও বজ্রপাত। মনিমোহনরা কাজ বন্ধ করে দেন।
মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় খেত মজুরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সকাল ৬ থেকে আট ঘণ্টা কাজ করলে ২০০ টাকা মজুরি মেলে। খেত মজুর কৃষ্ণপদ মণ্ডলের কথায়, ‘‘সকাল থেকে অনেক সময় এত বাজ- পড়ছে, বাড়ি থেকেই বের হতে পারছি না। খেতে কাজ করার সময়ে বাজ পড়তে শুরু করলে ফিরে আসছি।’’ তা হলে রোজগারপাতির কী অবস্থা? কৃষ্ণপদ জানালেন, অনেক সময়ে পরে কাজ করে পুষিয়ে দিতে হচ্ছে মালিককে। না হলে পরের দিন কাজ করতে হচ্ছে। তবেই টাকা মিলছে। কিন্তু পরের দিন কাজ করলে একটা দিনের রোজগার নষ্টই হয়। অনিল বিশ্বাসের ১০ বিঘে জমি রয়েছে। কিছু জমিতে পাট ফলেছে। কয়েক বিঘে জমিতে ধান চাষ করবেন সোমবার বীজতলা তৈরির কাজ শুরু করছিলেন। কিন্তু এমন বাজ পড়া শুরু হয়, ভয়ে বাড়িমুখো হতে হয়েছে। খেতমজুরেরাও কাজ করতে চাননি।
বনগাঁ হাইস্কুলের পদার্থবিজ্ঞানের প্রাক্তন শিক্ষক দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘বজ্রপাত শুরু হলে চাষি ও খেত মজুরদের উচিত, দ্রুত কাছাকাছি কোনও বাড়ি বা কু্ঁড়ে ঘরে আশ্রয় নেওয়া। কোনও বিচ্ছিন্ন একটি গাছের তলায় বা বিদ্যুৎ-টেলিফোনের খুঁটির কাছে যাওয়াই উচিত নয়। কারণ, বাজ সব সময়ে উঁচু বস্তুকে অবলম্বন করে মাটিতে পৌঁছতে চায়।’’
বজ্রপাতে শিশু ও বৃদ্ধদের শ্রবণ শক্তি চলে যেতে পারে, বৃদ্ধেরা হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন বলেও জানালেন চিকিৎসক গোপাল পোদ্দার। তাঁর পরামর্শ, টানা বাজ পড়তে থাকলে শিশু ও বৃদ্ধদের কানে তুলো বা অন্য কিছু দিয়ে রাখা উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy