করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে পড়ুয়াদের সচেতন করতে সমস্ত জেলা পরিদর্শকের দফতরকে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর। সেই মতো জেলার বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিল শিলিগুড়ি স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) দফতর। অনেক স্কুলে সচেতনতা কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। অনেক স্কুল বসন্ত উৎসব পালনের কর্মসূচি বাতিল করেছে। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য সামনে উচ্চ মাধ্যমিক হওয়ায় কিছু স্কুলে অবশ্য এমনিতেই বসন্ত উৎসব পালিত হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও একই নির্দেশ দেওয়ার কথা জানিয়েছে। তবে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন কোনও নির্দেশিকা আসেনি বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
দার্জিলিং পাহাড়ের অনেক স্কুলে বিদেশের পড়ুয়ারাও আসে। জেলাশাসক দীপাপ প্রিয়া পি বলেন, ‘‘ইতালি, তাইল্যান্ড, নেপাল থেকে অনেক পড়ুয়া পাহাড়ের স্কুলগুলোতে ভর্তি হয়। সে কারণে আমরা আগে থেকেই ওই স্কুলগুলোর প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে সচেতনতা প্রচারে কর্মশালা করেছি। সেই মতো তাঁরা স্কুলে বিষয়টি প্রচারের ব্যবস্থা নিয়েছেন। সেই কাজ চলছে। সচেতন করা, সতর্ক করা হচ্ছে।’’ দার্জিলিঙে নেপালি ভাষায় লিফলেট বানিয়ে বিলি করা হয়েছে।
এ বার সমতলের স্কুলগুলোতেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিয়ে পড়ুয়াদেরও সচেতন করা হচ্ছে বলে জানান স্কুল পরিদর্শক। বাগডোগরার চিত্তরঞ্জন স্কুলের মতো কয়েকটি স্কুলে ইতিমধ্যেই করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতা প্রচার শুরু করেছে। আজ, শনিবারও ভারতী হিন্দি হাইস্কুলের মতো কয়েকটি স্কুল প্রচারে নামছে বলে জানিয়েছে। স্কুল পরিদর্শক রাজীব প্রামাণিক বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মেনে স্কুলগুলোকে পড়ুয়াদের মধ্যে সচেতনতা প্রচার। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি জানাতে বলা হয়েছে। সেই মতো স্কুলগুলো প্রচারে নামছে।’’ তবে সদ্য মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়া এবং উচ্চ মাধ্যমিক শুরু হওয়ার মুখে অনেক স্কুলের তরফেই প্রচারে নামা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
আইসোলেশন ওয়ার্ড কোথায় কেমন
শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ৬ শয্যার (মহিলাদের জন্য দু’টি)। আলাদা ভেন্টিলেটর না থাকায় স্বাস্থ্য দফতর থেকে চাওয়া হয়েছে। রয়েছে ক্যুইক রেসপন্স টিম
জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ৬ শয্যার। দু’টি ভেন্টিলেটর রয়েছে। পরিষেবা দিতে ১৪ জন প্রশিক্ষিত কর্মী
দার্জিলিং: দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে ৪ শয্যার। ভেন্টিলেটর নেই, নেই প্রশিক্ষিত দলও
লালারস পরীক্ষা
সন্দেহভাজন রোগীদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা উত্তরবঙ্গে নেই। নাইসেডে পাঠানো হয়।
সাবধানতায়
পিপিই: পার্সোনাল প্রোটেকটেড ইকুইপমেন্ট (যে বিশেষ পোশাক পরে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর কাছে যান চিকিৎসক, নার্সরা)। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিঙের হাসপাতালে পিপিই পর্যাপ্ত রয়েছে বলে দাবি
এন ৯৫ মাস্ক: উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল, জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি এবং দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে বলে দাবি।
খোলা বাজারে কী রয়েছে?
শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি শহর, দার্জিলিঙে জোগান কার্যত নেই। তবে শিলিগুড়িতে আগাম জানালে কিছু ওষুধের দোকান এনে দিচ্ছে। দোকানে পাওয়া যাচ্ছে হাত পরিষ্কার করার স্যানিটাইজ়ারও।
‘এন-৯৫’ মাস্ক কী?
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে ব্যবহার করার কথা বলা হচ্ছে এই মাস্ক। এটি এমন প্রযুক্তিতে তৈরি যাতে অধিকাংশ বায়ুবাহিত ধূলিকণাকে প্রতিহত করা যায়। ফ্লু জাতীয় ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচতেও এটি ব্যবহার করা যেতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
দাম কেমন: ১৫০ টাকা থেকে শুরু। তবে সংস্থা ও মানের হেরফেরে দাম বেশি হতে পারে।
আরও যা: ব্যবহার করা যায় বিভিন্ন ধরনের ত্রিস্তরীয় সার্জিক্যাল মাস্কও। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ঠিক পদ্ধতি মেনে মাস্ক ব্যবহার করা উচিত।
তবে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ইউজিসির কোনও নির্দেশিকা এসে পৌঁছয়নি বলে জানান উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য। যদিও ইউজিসি’র তরফে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলোতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সচেতনতা প্রচার করতে। ক্যাম্পাসে জমায়েত না করতে। কোনও
পড়ুয়া যদি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে এমন কোনও দেশ থেকে ঘুরে ফেরেন। অথবা করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসেন তাহলে কোয়ারেন্টাইন করে থাকতে হবে। কর্তৃপক্ষকেও সে
ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওই পড়ুয়া যেন ক্যাম্পাসে না আসেন তাও নজরে রাখতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy