প্রতীকী চিত্র।
অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে বুধবার থেকে শুরু হল করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা পরিষেবা। হাসপাতালটিকে কোভিড হাসপাতাল হিসাবে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এই হাসপাতালে আর অন্য রোগীরা চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন না। এলাকাবাসীর দাবি, তা হলে এলাকাতেই অন্য রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য অশোকনগর হাসপাতালে ৬০টি শয্যা থাকছে। ৩০টি পুরুষ এবং ৩০ মহিলাদের। এখন থেকে ওই হাসপাতালে শুধু মাত্র করোনা আক্রান্তদেরই চিকিৎসা করা হবে। হাসপাতালে অন্য কোনও রোগীকে ভর্তি করা হবে না। বন্ধ থাকবে বহির্বিভাগে রোগী দেখাও। অশোকনগরে কোভিড হাসপাতাল চালু হওয়ায় খুশি এলাকার মানুষ। তবে তাঁদের প্রশ্ন, তা হলে অন্য রোগের চিকিৎসা কোথায় হবে? চিকিৎসার জন্য রাত দুপুরে কোথায় যাবেন এলাকাবাসী? তাঁদের দাবি, পুরসভা পরিচালিত প্রজ্ঞানানন্দ সরস্বতী মাতৃ সেবাসদন হাসপাতালে অন্য রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা করুক পুর কর্তৃপক্ষ।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, ‘‘বুধবার থেকে অশোকনগরে কোভিড হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। অন্য রোগীদের জন্য এখন হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্য রোগীরা এখন থেকে হাবড়া হাসপাতাল থেকে পরিষেবা পাবেন।’’ অশোকনগরের প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের সত্যসেবী কর বলেন, "অশোকনগর বিধানসভা এলাকার প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পান অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে। বিকল্প চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে এটিকে কোভিড হাসপাতাল করায় রোগীদের অসুবিধার মধ্যে ফেলে দেওয়া হল। আমরা চাই, পূর্ণাঙ্গ কোভিড হাসপাতাল চালু হোক। এবং অন্য রোগীদের জন্য এলাকাতেই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।" সিপিএমের পক্ষ থেকে সম্প্রতি পুরপ্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে অন্য রোগীদের বিকল্প চিকিৎসা পরিষেবা চালুর দাবি করা হয়েছিল। কারণ, অশোকনগর থানা এলাকার রোগীদের এলাকার বাইরের হাসপাতালে যেতে হলে সমস্যা হবে। তা ব্যয় সাপেক্ষও বটে। করোনা পরিস্থিতিতে রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে, বিশেষ করে রাতে যানবাহন পাওয়াটা যথেষ্ট কঠিন। বিজেপির অশোকনগর বিধানসভা কেন্দ্রের আহ্বায়ক স্বপন দে বলেন, ‘‘অন্য রোগীদের বিকল্প চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।’’
অশোকনগর-কল্যাণগড়ের পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকার বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে অন্য রোগীরা এখন হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে যাবতীয় পরিষেবা পাবেন। পুরসভার পক্ষ থেকে শীঘ্র পুরসভা পরিচালিত প্রজ্ঞানানন্দ সরস্বতী মাতৃ সেবাসদন হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কোভিড হাসপাতাল চালু হলেও সেখানে এখনই আইসিসিইউ, ভেন্টিলেটর বা রোগীদের জন্য এসির ব্যবস্থা নেই। অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে থাকা বর্তমান চিকিৎসা পরিকাঠামো দিয়েই কোভিড হাসপাতাল চলবে। অশোকনগরের বিধায়ক ধীমান রায় বলেন, ‘‘আইসিসিইউ ও ভেন্টিলেটর ব্যবস্থা চালু করতে স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে। এখানে ভর্তি কোনও করোনা রোগীর শারীরিক অবস্থার অবণতি হলে দ্রুত তাঁকে বারাসত বা অন্য কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। অন্য রোগীর ওষুধের জন্য হাসপাতালে থাকা ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। অন্য রোগীদের যাতে হাবড়া হাসপাতালে পরিষেবা পেতে কোনও অসুবিধা না হয় তা আমরা দেখব।’’
হাসপাতাল সুপার সোমনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘এখানে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে করোনা রোগীরা ভর্তি হতে পারবেন।’’
এদিকে পুরসভা এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। প্রবোধ জানান, বুধবার পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৮৭ জন।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy