ভাঙড়ে তখনও চলছে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
লকডাউন পর্বে খাদ্যসামগ্রীর জোগান নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন অনেকেই। এরই মধ্যে শিশুদের জন্য দেওয়া সরকারি প্রকল্পের খাবার নিয়ে অভিযোগ উঠছে নানা জায়গায়।
পড়ুয়াদের বরাদ্দ চাল, আলু কম দেওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার দুপুরে ভাঙড়ের ঘটকপুকুর হাইস্কুলে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকেরা। অভিযোগ, সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী পড়ুয়া পিছু তিন কেজি করে চাল, তিন কেজি করে আলু দেওয়ার কথা বলা হলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ এ দিন দুই থেকে আড়াই কেজি করে চাল, আলু বিতরণ করছিলেন। এরই প্রতিবাদে শতাধিক অভিভাবক স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ভাঙড় থানার পুলিশ। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্য সামগ্রী বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়।
এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ভাঙড় ১ বিডিও সৌগত পাত্র বলেন, ‘‘কেউ কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী খাদ্য সামগ্রী বিতরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ একই অভিযোগে মঙ্গলবার উত্তেজনা ছড়ায় হাসনাবাদ ও হিঙ্গলগঞ্জেও।
হিঙ্গলগঞ্জের রমেন্দ্রনগর শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের সহায়িকা মিলি হালদারের বিরুদ্ধে সরকারি খাবার কম দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিভাবকেরা দাঁড়িপাল্লা এনে চাল মাপেন। অভিভাবকদের অভিযোগ, যা দেওয়ার কথা, তার থেকে বেশ কিছুটা খাবার কম দেওয়া হচ্ছে। মন্দিরা ঘোষ নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘আগে পোকায় ভরা চাল দিয়ে খিচুড়ি দেওয়া হত। এখন খাবার কম দেওয়া হচ্ছে।’’ একই বক্তব্য পুঁটি মণ্ডল ও লতা মণ্ডলের।
স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্য শ্রাবণী ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারের দেওয়া সামগ্রী বেআইনি ভাবে বাড়ি থেকে প্যাকেট করে আনা হচ্ছে। কিছু দিন থেকে আমার কাছে শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে খাবার কম দেওয়ার অভিযোগ আসছিল। বিষয়টি নিয়ে সহায়িকাকে সাবধানও করা হয়। এখানে এসে দেখলাম, সত্যিই কম দেওয়া হচ্ছে। অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা।’’ হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সুদীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘আগেও সরকারের দেওয়া খাদ্যসামগ্রী কম দেওয়ার অভিযোগ হয়েছিল। বিডিও এবং সিডিপিওকে বলা হয়েছে।’’
মিলির অবশ্য বক্তব্য, ‘‘বস্তার মধ্যে থাকা প্যাকেট ফেটে যাওয়ায় এই বিপত্তি।’’ তাঁর কথায় কার্যত সমর্থনই করেছেন হিঙ্গলগঞ্জ সুসংহত শিশু বিকাশ সেবা প্রকল্পের আধিকারিক রফিকুল বৈদ্য। তাঁর যুক্তি, ‘‘বৃষ্টিতে ওই সহায়িকা বাড়ি থেকে প্যাকেট করে বস্তায় ভরে আনছিলেন। পথে প্যাকেট ফেটে যায়। খাদ্যদ্রব্যও কম হয়ে যায়।’’
হাসনাবাদ থানার পাটলি খানপুর পঞ্চায়েতের বেনা গ্রামে আইসিডিএস কেন্দ্রে নিম্নমানের চাল-ডাল-আলু দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার ১৪৬ নম্বর আইসিডিএস সেন্টারের থেকে দু’কেজি করে চাল, আলু ও ৩০০ গ্রাম করে ডাল দেওয়া হচ্ছিল। অভিভাবকদের দাবি, পোকা লাগা ডাল এবং খুব ছোট ছোট আলু দেওয়া হয়েছে। কিছু আলু আবার পচা। অভিভাবকেরা বিক্ষোভ দেখান।
পঞ্চায়েতের প্রধান পারুল গাজি বলেন, ‘‘আগেও বেশ কয়েকবার এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। এ দিনও ডাল-আলুর মান নিয়ে অভিযোগ উঠল। আমি বিষয়টি ব্লক প্রশাসনকে জানাব।’’ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী নুরজাহান খাতুন বলেন, ‘‘যেহেতু আগে থেকে ডাল আনা ছিল, তাই কিছুটা খারাপ হয়ে গিয়েছে। তবে নতুন করে কিনে ভাল ডালও মিশিয়ে দিয়েছিলাম। বাজারে যেমন আলু পেয়েছি, তেমনই দেওয়া হচ্ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy