Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

জ্বর-ডেঙ্গি রোগীতে উপচে পড়ছে হাবড়া হাসপাতাল

গত কয়েক দিন ধরে এই পরিস্থিতি চলছে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভর্তি ছিলেন ২৮৯ জন রোগী। যদিও হাসপাতালের সব ওয়ার্ড মিলিয়ে শয্যার সংখ্যা ১৩১।

ঠাসাঠাসি: এক বিছানায় একাধিক রোগী। ছবি: সুজিত দুয়ারি

ঠাসাঠাসি: এক বিছানায় একাধিক রোগী। ছবি: সুজিত দুয়ারি

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাবড়া শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৯ ০১:৫০
Share: Save:

জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। হাসপাতালের বেডে তিলধারণের জায়গা নেই। মেঝে পর্যন্ত ভর্তি হয়ে যাচ্ছে রোগীর ভিড়ে। একই বেডে মশারি খাটিয়ে তিন-চার জন শুয়ে থাকছেন।

গত কয়েক দিন ধরে এই পরিস্থিতি চলছে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভর্তি ছিলেন ২৮৯ জন রোগী। যদিও হাসপাতালের সব ওয়ার্ড মিলিয়ে শয্যার সংখ্যা ১৩১। স্বাভাবিক ভাবেই রোগীদের মেঝেয় বা শয্যায় গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, ‘‘জ্বরে আক্রান্ত রোগী বেশি আসার ফলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পরিকাঠামো না বাড়লে সমস্যা মিটবে না। তবে সকলের উপযুক্ত চিকিৎসা হচ্ছে।’’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে জ্বরে আক্রান্ত প্রায় ৮০ জন। ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে ৩০ জনের রক্তে। চলতি মরসুমে হাবড়া হাসপাতালে ইতিমধ্যেই জ্বর-ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। বর্ষা শুরু হতেই ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। ফের আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন বাসিন্দারা। ২০১৭ সালে হাবড়া থানা এলাকায় জ্বর-ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়িয়েছিল। প্রায় ২০ জন মারা যান। ২০১৮ সালে জ্বর-ডেঙ্গি ছড়ালেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি বলে প্রশাসন সূত্রের দাবি।

গত বছর হাবড়া পুরসভা আগে ভাগে ডেঙ্গি প্রতিরোধে পদক্ষেপ করেছিল।

কিন্তু এ বার তা হল না কেন, সেই প্রশ্নই ঘুরছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। গত বছর অক্টোবর মাস থেকে পুরসভা চলছে প্রশাসকের মাধ্যমে। সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা, ডেঙ্গি প্রতিরোধে এ বার ঢিমেতালে কাজ হচ্ছে। নিকাশি নালা সাফাই, মশা মারা, ঝোপ-জঙ্গল পরিষ্কার করার কাজে গতি নেই। যদিও প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, ডেঙ্গি প্রতিরোধে কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না। নিয়মিত মশা মারা থেকে নালা সাফাই অভিযান চলছে।

হাবড়া হাসপাতালে ডেঙ্গি রোগীরা শুধুমাত্র হাবড়ার বাসিন্দা নন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবড়া, গাইঘাটা, অশোকনগর, হরিণঘাটা থেকেও ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী আসছেন। হাবড়া ফুলতলা, গণদীপায়ন, গাইঘাটার কুলপুকুর, কলাসিমা, অশোকনগরের বনবনিয়া এলাকা থেকেও ডেঙ্গি আক্রান্তরা হাবড়া হাসপাতালে আসছেন। এখনে ডেঙ্গির রক্ত পরীক্ষার জন্য অ্যালাইজা পদ্ধতির ব্যবস্থা রয়েছে। রোজ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রক্ত পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। রাত ৮-৯ টার মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে। ফলে রোগীর দ্রুত চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে।

হাসপাতালের ভেতর মশা মারা তেল ছড়ানো হচ্ছে এবং বাইরে ব্লিচিং পাউডার দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর থেকে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী বাড়ানো হয়েছে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে সুপার বলেন, ‘‘পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য আরও লোকজন প্রয়োজন। বিশেষ করে গ্রুপ ডি কর্মী দরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Habra Hospital Health Dengue Fever Patient
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE