Advertisement
১১ মে ২০২৪

মুণ্ড কেটে খুন ত্রিকোণ প্রেমের জেরে

পুলিশ জানায়, মন্দিরবাজারের বাসিন্দা আলেয়া তফসিয়ায় একটি ব্যাগের কারখানায় কাজ করতেন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা 
জয়নগর শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২০ ০০:৪৭
Share: Save:

ভিনরাজ্যে পালানোর পরিকল্পনা করেছিল দুষ্কৃতীরা। সেই মতো উঠেও পড়েছিল দূরপাল্লার ট্রেনে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ট্রেন ছাড়ার মিনিট কয়েক আগে হাওড়া স্টেশন থেকে জয়নগরের খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরে ফেলল পুলিশ।

গত শুক্রবার সকালে জয়নগরের রাজাপুর করাবেগ পঞ্চায়েতের চড়াকাটার কাছে একটি খালের ধার থেকে এক মহিলার গলাকাটা দেহ উদ্ধার হয়। পরে খাল থেকে মহিলার কাটা মুণ্ডটিও পায় পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, মন্দিরবাজারের বাসিন্দা বছর চল্লিশের ওই মহিলার নাম আলেয়া বিবি। ত্রিকোণ প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে জটিলতার জেরেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। খুনের অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে হাওড়া স্টেশন থেকে মূল অভিযুক্ত ফারমান লস্কর ওরফে বাবলু ও মানিরা সাউকে গ্রেফতার করা হয়। পরে কুলতলির মেরিগঞ্জ থেকে ধরা হয় আতিয়ার রহমান শেখ নামে আরও একজনকে।

পুলিশ জানায়, মন্দিরবাজারের বাসিন্দা আলেয়া তফসিয়ায় একটি ব্যাগের কারখানায় কাজ করতেন। বিবাহিত আলেয়া মেরিগঞ্জের বাসিন্দা বাবলুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বাবলুও বিবাহিত। এ দিকে, আলেয়ার সঙ্গেই ওই কারখানায় কাজ করত তার প্রতিবেশী মানিরা। বিবাহিত মানিরাও বাবলুর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তদন্তকারীদের অনুমান, মানিরা ও বাবলুর সম্পর্কে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন আলেয়া। তাই দু’জন মিলে আলেয়াকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। এই কাজে তাদের সাহায্য করে বাবলুর বন্ধু আতিয়ার। বৃহস্পতিবার রাতে আলেয়াকে রাজাপুর করাবেগের ওই নির্জন খালের ধারে ডেকে আনা হয়। তারপর গলা কেটে তাঁকে খুন করা হয়। বাবলু ও মানিরার প্রথমে গয়া, তারপর আগরা পালানোর পরিকল্পনা ছিল। সেই মতো মঙ্গলবার রাতে হাওড়া থেকে ট্রেনে চাপে। ট্রেন ছাড়ার মিনিট পনেরো আগেই তাদের ধরে ফেলে পুলিশ। কী ভাবে এগোলো তদন্ত? তদন্তকারীরা জানান, আলেয়া কারখানায় যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। ফেরার কথা ছিল সপ্তাহ দু’য়েক পরে। গত বৃহস্পতিবার রাতের পর আর আলেয়ার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁর মা। দিন কয়েক অপেক্ষা করে আলেয়ার বন্ধু মানিরার সঙ্গেও যোগাযোগ করতে না পেরে মন্দিরবাজার থানায় জানান তিনি। খবর যায় জয়নগর থানায়। আলেয়ার পরিবারকে জয়নগরে নিয়ে আসে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া চশমা, ছাতা দেখে চিনতে পারেন আলেয়ার মা। পরে মর্গে দেহ শনাক্ত করেন তিনি। আলেয়ার বন্ধু মানিরা এবং বাবলুর কথা জানা যায়। মানিরার খোঁজ শুরু করে পুলিশ। খবর আসে, মঙ্গলবার রাতে ট্রেন ধরবে মানিরা। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ৯ নম্বর প্ল্যাটফর্মে গয়াগামী ট্রেনে চাপে মানিরা ও বাবলু। যাত্রী তালিকা থেকে মানিরার নাম ও সিট নম্বর দু’জনকে পাকড়াও করে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কুলতলির মেরিগঞ্জ থেকে রাতেই আতিয়ারকে ধরা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE