প্রতিবাদ: বনগাঁয় সোচ্চার বহু মানুষ। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
কোথাও ব্যানারে লেখা, ‘আমরা লজ্জিত’। কোথাও লেখা হয়েছে, ‘দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খানখান।’ জেএনইউতে ছাত্রছাত্রীদের উপরে হামলায় দোষীদের শাস্তির দাবিও তোলা হল মিছিল থেকে।
সব মিলিয়ে সোমবার বিকেলে পথে নেমে গর্জে উঠল বনগাঁ। কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক কর্মীরা পথে নেমে সোচ্চার হলেন।
সোমবার সন্ধ্যায় বনগাঁ শহরের ত্রিকোণ পার্ক এলাকা থেকে মিছিল বেরোয়। মতিগঞ্জ বাটারমোড় রামনগর রোডের মোড় ঘুরে মিছিল শেষ হয় ত্রিকোণ পার্ক এলাকায়। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে দুষ্কৃতীদের হামলায় ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ, শিক্ষিকা সুচরিতা সেন-সহ একাধিক ছাত্রছাত্রী আহত হন। রবিবার রাতেই প্রাবন্ধিক বিশ্বজিৎ ঘোষ, নাট্যকার ভবানী ঘটক, গল্পকার দেবাশিস রায়চৌধুরী, কবি স্বপন চক্রবর্তীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন, এই ঘটনার প্রতিবাদে তাঁরা পথে নামবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ডাক দেওয়া হয়। সোমবার দুপুরে প্রস্তুতি বৈঠক হয়। সেখানে বনগাঁর তরুণ প্রজন্মের অনেকে সামিল হন।
রাস্তায় নেমে গানে-কবিতায় বক্তৃতা স্লোগানে হামলার বিরুদ্ধে সরব হন সকলে। ‘পথে এ বার নামো সাথী’— গান ধরেন অনেকে মিছিল থেকে। রুদ্রপ্রসাদ ঘোষ, সৌম্যদীপ রায়, রণদীপ বন্দ্যেপাধ্যায়, দিব্যেন্দু ঘোষ, তন্ময় বিশ্বাস, সুশোভন দত্ত, দীপাঞ্জয় দত্ত, পল্লবী ঘোষের মতো একদল তরুণ-তরুণী প্ল্যাকার্ড- পোস্টার হাতে মিছিলে হাঁটেন। তাঁদের কথায়, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই বর্বরোচিত হামলা আমরা মেনে নিতে পারছি না। এমন ঘটনা হৃদয়কে নাড়া দিয়েছে। সে জন্যই প্রতিবাদ।’’ এ দিন মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে বিশিষ্টজনেরা বলছিলেন, ‘‘দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যেই সাম্প্রদায়িক শক্তি লুকিয়ে রয়েছে। সেই শক্তি মাথাচাড়া দিয়েছে। এখনই প্রতিহত করতে না পারলে দেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে। সে জন্যই আমাদের পথে নামা।’’
আয়োজকেরা জানান, সারা দেশ জুড়ে অস্থিরতা তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। রাস্তায় তো তাঁদের নামতে হতই। জেএনইউ ঘটনার পরে পথে না নামলে অন্যায় হত।
সাম্প্রতিক সময়ে কোনও ঘটনায় বনগাঁর বিদ্দজ্জনেরা এককাট্টা হয়ে পথে নেমে প্রতিবাদে সামিল হলেন এই প্রথম। এখন থেকে তাঁরা এই প্রতিবাদের ধারা বজায় রাখবেন বলে জানান। মিছিল শেষে পথসভাও করা হয়। এক সাহিত্যিকের কথায়, ‘‘বাক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। ছদ্মবেশী দেশপ্রেমীরা হিংসা ছড়াচ্ছে। আমাদের সকলে মিলে তা প্রতিহত করার সময় এসেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy