বাবা ও মায়ের সঙ্গে রূপম।
সকাল থেকেই টিভির সামনে বসেছিল সে। ১০টা নাগাদ যখন টিভিতে ফল প্রকাশ হল তখন বিশ্বাসই করতে পারছিল না হাবরার কামারথুবা এলাকার বাসিন্দা রূপম সাহা।
হাবরা বয়েজ হাইস্কুলের ছাত্র রূপম উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৮৪ পেয়ে স্কুলে প্রথম হয়েছে। রাজ্যের মধ্যে নবম স্থান পেয়েছে। এরপর থেকেই আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশীদের ভিড় বাড়িতে। তাকে অভিনন্দন জানাতে ব্যস্ত সবাই। রূপম বলে, ‘‘ভাল ফল করব জানতাম। কিন্তু এতটা ভাল ফল হবে ভাবিনি।’’ ভভিষ্যতে কোনও পরিকল্পনা করেনি সে। কিন্তু ফ্রিজিক্স বা অঙ্ক নিয়ে এখন পড়তে চায়। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান রূপম ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় ভাল। তবে ঘণ্টা ধরে সে কখনও লেখাপড়া করেনি। যখন ভাল লাগত পড়ত। উচ্চ মাধ্যমিকের প্রস্তুতি নিয়েছে ছ’জন শিক্ষকের কাছে। বাবা ব্যবসায়ী মা গৃহবধূ। অবসর সময় রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনতে ভালবাসে সে। আর ভাল লাগে গল্পের বই পড়তে। সব লেখকেরই বই পড়ে সে। বাবা রমলবাবু মা কবিতাদেবী বলেন, ‘‘ভাল ফল করবে জানতাম। এতটা ভাল আশা করিনি। খুব আনন্দ হচ্ছে।’’
স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সায়ন্তন।—নিজস্ব চিত্র।
অন্য দিকে কাকদ্বীপ মহকুমায় প্রথম হয়েছে কাকদ্বীপ বীরেন্দ্র বিদ্যানিকেতনের ছাত্র সায়ন্তন দাস। তার ইচ্ছে বড় হয়ে চিকিৎসক হওয়ার। আপাতত কলকাতার কোনও ভাল কলেজে ভর্তি হতে চায় সে। তার বাবা শক্তিপদ দাস বাসন্তীর একটি স্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়ান। তাঁর কথায়, ‘‘স্কুলে পদার্থবিদ্যা এবং বায়োলজির ল্যাবের সমস্যা রয়েছে। তার মধ্যেই শিক্ষকেরা যে ভাবে খেটেছেন, তাতেই ভাল ফল করেছে আমার ছেলে।’’ সায়ন্তন নিজেও জানিয়েছে, স্কুলের প্রধানশিক্ষক এবং বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকেরা নড়বড়ে ল্যাবে যে ভাবে ছাত্রছাত্রীদের পিছনে সময় দেন, তা অন্যান্য স্কুলে করা হয় না। কাকদ্বীপের বড় স্কুলগুলির মধ্যে পড়ে বীরেন্দ্র বিদ্যানিকেতন। এখানে এখন প্রায় ১৩ টি শিক্ষকপদ শূন্য। বিজ্ঞানের গবেষণাগারগুলিতে প্রয়োজন আরও আধূনিক যন্ত্রপাতি। এত ছাত্রছাত্রী, যে সবার শ্রেণিকক্ষে ঠিক মতো জায়গা হয় না। এসব নিয়েই বরাবর উচ্চমাধ্যমিকে ভাল করছে এই স্কুল। স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘সমস্যা থাকলেও আমাদের শিক্ষকরা কিন্তু বেশ খাটে ছাত্রছাত্রীদের পিছনে। মাধ্যমিকের পর অন্যান্য স্কুল থেকে বাচ্চারা সেই টানেই আসছে। আগে মাধ্যমিকের পর এই স্কুল থেকে বাচ্চারা চলে যেত, তাও বন্ধ হয়েছে। তাই সায়ন্তনদের এই ফলের কৃতিত্ব আমি আমাদের শিক্ষকদেরই দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy