প্রতীকী ছবি।
অবরোধে অনেকক্ষণ ট্রেন আটকে স্টেশনে। এক কলেজ ছাত্রী শৌচালয়ের খোঁজ করলেন। কিন্তু হোটর স্টেশনের ১ ও ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে একটিও মহিলা শৌচালয় নেই।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে শিয়ালদহ থেকে ডায়মন্ড হারবার স্টেশন পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার দূরত্ব। সময় লাগে প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টা। ডায়মন্ড হারবার থেকে বারুইপুর প্রায় ৩৫ কিলোমিটার পথে ১৫টি স্টেশন। ওই স্টেশনগুলির মধ্যে ডায়মন্ড হারবার, মগরাহাট ও ধামুয়া এই তিনটি স্টেশনে মহিলাদের শৌচালয় রয়েছে। কিন্তু তা খুব একটা ভাল নয়। বাকি স্টেশনগুলিতে মহিলাদের কোনও শৌচালয়ই নেই। পুরুষদের জন্য গুটি কয়েক স্টেশনে শৌচালয় থাকলেও তা ব্যবহারের অযোগ্য। কোথাও দরজা ভাঙা, কোথাও জলের অভাব। শৌচালয়ের ধারেকাছে দুর্গন্ধে টেকা দায়।
গুরুদাসনগর স্টেশনের ১ ও ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মেও কোনও মহিলা শৌচালয় নেই। বাসুলডাঙা, নেতড়া, দেউলা স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে রয়েছে একটি করে ছোট পুরুষ শৌচালয়। পরের স্টেশন সংগ্রামপুর। ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে কোনও শৌচালয় নেই। ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে একটি শৌচালয় আছে। কিন্তু দুর্গন্ধের জন্য সেখানে কেউ যেতে পারেন না।
মগরাহাট স্টেশনের ১ ও ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পুরুষ ও মহিলা শৌচালয় রয়েছে। তবে তা অপরিচ্ছন্ন। শৌচালয়ের দরজাও নেই। কোথাও মল পড়ে থাকতে দেখা গেল। যাত্রীরা জানালেন, শৌচালয়ের পাশ থেকে যেতে গিয়ে দম বন্ধ হয়ে আসে।
মন্দিরবাজারের ঘাটেশ্বরা হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষিকা মৌমিতা দাস (মণ্ডল) বলেন, ‘‘আমি নিউ গড়িয়া স্টেশন থেকে লক্ষ্মীকান্তপুর স্টেশন পর্যন্ত যাতায়াত করি। দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু শহরের মধ্যে নিউ গড়িয়া স্টেশনে শৌচালয় থাকলেও তার কোনও দরজা নেই। বিশ্রী পরিস্থিতি।’’
ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসক নীতা রায়ের কথায়, ‘‘প্রতিটি স্টেশনে মহিলাদের জন্য শৌচালয় দরকার। কারণ দীর্ঘ সময় ধরে শৌচালয়ে না যেতে পারলে অসুস্থ বোধ করি।’’
কলেজ ছাত্রী তিয়াসা নস্করের কথায়, ‘‘নিত্য কলেজ যাওয়ার পথে দেখি কোনও স্টেশনে মহিলাদের জন্য আলাদা ভাল শৌচালয় নেই। খুবই সমস্যার।’’
ম্যানেজমেন্টের ছাত্রী স্নেহা বসু বলেন, ‘‘আমাকে ডায়মন্ড হারবার থেকে বালিগঞ্জ স্টেশন পর্যন্ত যেতে হয়। কিন্তু স্টেশনগুলিতে মহিলাদের শৌচালয়ের ব্যবস্থা তেমন ভাবে নেই। আর যেখানে আছে, সেই শৌচালয়গুলিও নোংরা। স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের দরকার হলে ভিতরে ঢোকা মুশকিল।’’ অনেক মহিলাই জানালেন, দুর্গন্ধযুক্ত অস্বাস্থ্যকর জায়গার বদলে যাতায়াতের পথে তাঁরা শৌচালয় এড়িয়ে চলতেই চান।
রেল দফতরের দাবি, বেশ কিছু স্টেশনে শৌচালয় রয়েছে। সেখানে নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। তবে স্টেশনের শৌচালয়গুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy