Advertisement
১১ মে ২০২৪

শিশু কোলে উধাও অপরিচিতা, হুলুস্থুল

শুক্রবারের এই ঘটনায় ধৃত সরমা সিংহের অবশ্য দাবি, শিশুটির মা দীর্ঘক্ষণ না ফেরায় খাবার কিনতে বেরিয়েছিলেন তিনি। দাবি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আপাতত সরমার বিরুদ্ধে শিশু চুরির মামলাই রুজু হয়েছে।

ধৃত: সরমা সিংহকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: শান্তশ্রী মজুমদার

ধৃত: সরমা সিংহকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: শান্তশ্রী মজুমদার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ০১:৩৯
Share: Save:

বাচ্চাকে অপরিচিত মহিলার কোলে দিয়ে আউটডোরের লাইনে শাড়ি ঠিক করছিলেন মা। অভিযোগ, সেই সুযোগে বাচ্চা নিয়ে চম্পট দেন ওই মহিলা। সিসি টিভির ফুটেজ দেখে শুরু হয় তল্লাশি। পরে কাকদ্বীপ হাসপাতালের বাইরের চত্বর থেকে উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে। গ্রেফতার করা হয়েছে মহিলাকেও।

শুক্রবারের এই ঘটনায় ধৃত সরমা সিংহের অবশ্য দাবি, শিশুটির মা দীর্ঘক্ষণ না ফেরায় খাবার কিনতে বেরিয়েছিলেন তিনি। দাবি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আপাতত সরমার বিরুদ্ধে শিশু চুরির মামলাই রুজু হয়েছে।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ ন’মাসের শিশুকন্যা সহেলিকে নিয়ে কাকদ্বীপ হাসপাতালের আউটডোরে আসেন অক্ষয়নগরের বাসিন্দা মল্লিকা পুরকাইত। লাইনে অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন। পিপাসা পায়। বাচ্চা নিয়ে অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে শাড়ি অগোছালো হয়ে পড়েছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি। কোলে বাচ্চা নিয়ে কোনও মতে শাড়ি ঠিক করছিলেন তিনি।

পুলিশকে মল্লিকা জানিয়েছেন, লাইনে তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা ওই অপরিচিত মহিলা বলেন, বাচ্চাকে আমার কাছে দিন। আপনি শাড়ি গুছিয়ে নিন। মল্লিকাদেবীর কথায়, ‘‘প্রচণ্ড ভিড়, ব্যাগ থেকে জল বের করে খেয়ে শাড়িটা ঠিক করছিলাম। পিছনে ফিরে দেখি বাচ্চা নেই। মহিলাও উধাও।’’

কান্নাকাটি জুড়ে দেন মল্লিকা। সঙ্গে সঙ্গে হুলুস্থুল পড়ে যায় হাসপাতাল চত্বরে। হাসপাতালের রক্ষীরা তল্লাশি শুরু করেন। খবর যায় থানায়। পুলিশও এসে পড়ে। খবর পেয়ে হাজির হয় মেয়ের বাবা বাপ্পাবাবুও। মহিলার বয়ান শুনে হাসপাতালের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে শুরু হয় অভিযান। বেশ কিছুক্ষণ পর বাচ্চাকে কাকদ্বীপ হাসপাতালের বাইরে চৌরাস্তার কাছ থেকে বাচ্চা কোলে সরমাকে দেখতে পেয়ে ধরে আনে হারউড পয়েন্ট উপকূল থানার পুলিশ।

থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মল্লিকা। দীর্ঘক্ষণ জেরা করা হয় সরমাকে। বিকেলের দিকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

পুলিশ জানতে পেরেছে, ত্রিশের ওই মহিলার বাপের বাড়ি কাকদ্বীপে। শ্বশুরবাড়ি হরিয়ানায়। পুলিশের কাছে সরমা দাবি করেছেন, চর্মরোগের চিকিৎসা করাতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। মল্লিকাদেবী নিজেই বাচ্চাকে তাঁর কাছে রেখে জ‌ল আনতে যান। অনেকক্ষণ না ফেরায় শিশুটিকে নিয়েই দোকানে খাবার কিনতে গিয়েছিলেন সরমা।

ঘটনার পিছনে শিশু চুরি চক্রের হাত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। আজ, শনিবার মহিলাকে কাকদ্বীপ আদালতে তোলার কথা। সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার তথাগত বসু বলেন, ‘‘অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে। ঘটনার আরও গভীরে তদন্ত প্রয়োজন।’’

ঘটনার পর থেকে কাকদ্বীপ নিরাপত্তা আরও জোরদার করার আশ্বাস দিয়েছেন হাসপাতালের সুপার রাজর্ষি দাস। তাঁর কথায়, ‘‘প্রচুর সিসিটিভি রয়েছে হাসপাতাল জুড়ে। তারপরেও প্রয়োজনে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে।’’ পাশাপাশি তাঁর অনুরোধ, বাচ্চা সঙ্গে থাকলে তাঁকে কোনও অবস্থাতেই যেন অপরিচিতের হাতে তুলে না দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE