Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বনগাঁর পুরপ্রধান নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন পুরমন্ত্রী

সম্প্রতি বনগাঁর তৃণমূলের পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের বিরুদ্ধে মহকুমাশাসকের কাছে অনাস্থা আনেন দলের ১৪ জন কাউন্সিলর।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

সীমান্ত মৈত্র
বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৯ ০৬:২১
Share: Save:

এই পুরপ্রধানকে চাই না। অন্য পুরপ্রধান দিন— বুধবার বারাসতের জেলা পরিষদ ভবনে দলের জেলা সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং জেলা পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষকে এমনটাই জানিয়ে দিলেন বনগাঁর ১৪ জন কাউন্সিলর। পরে দলের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, পুরপ্রধান নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন পুরমন্ত্রী।

সম্প্রতি বনগাঁর তৃণমূলের পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের বিরুদ্ধে মহকুমাশাসকের কাছে অনাস্থা আনেন দলের ১৪ জন কাউন্সিলর। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনের বৈঠকে ২০ জন কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। জেলা নেতৃত্ব সকলের বক্তব্য জানতে চান। পক্ষে বিপক্ষের কাউন্সিলররা তাঁদের মতামত জানান। বিদ্রোহী ১৪ জন কাউন্সিলরই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে তাঁদের অনড় অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন। বৈঠকে কংগ্রেসের একমাত্র কাউন্সিলর সাধন দাস উপস্থিত ছিলেন। এ নিয়ে বিদ্রোহী কাউন্সিলরেরা আপত্তি তোলেন।

অনাস্থার কারণ হিসাবে কাউন্সিলরেরা জানিয়েছিলেন, লোকসভা ভোটে এ বার তৃণমূল বনগাঁ পুরএলাকা থেকে প্রায় ২০ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল। ভোটের ফল বের হওয়ার পর কাউন্সিলররা এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। কাউন্সিলরদের কথায়, ‘‘আমরা বুঝতে পেরেছি এ বার মানুষ পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কারণে তৃণমূলকে ভোট দেননি। এখানে পিছিয়ে পড়ার একমাত্র কারণ পুরপ্রধানের আচরণ। মানুষ আমাদের জানিয়েছেন, তাঁরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে নন। তাঁরা ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আমরা তাই পুরপ্রধানকে

চাই না।’’

বৈঠক শেষে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘এ দিন কাউন্সিলরদের মতামত শুনেছি। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছে সেই রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। ১৪ জন কাউন্সিলর পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে মত দিয়েছেন। পুরপ্রধানের পদ নিয়ে পুরমন্ত্রী পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন।’’

কী বলছেন শঙ্কর?

তিনি বলেন, ‘‘বৈঠকে আমার বিরুদ্ধে কেউ কোনও অভিযোগ তুলতে পারেননি। পুরবোর্ড চালানোর ক্ষেত্রে কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকলে, দলীয় ও প্রশাসনিক স্তরে তদন্ত করা হোক। লোকসভা ভোটে যে সব পুরসভা ও পঞ্চায়েত এলাকায় ফল খারাপ হয়েছে সেখানকার চেয়ারম্যান ও পঞ্চায়েত প্রধানদেরও দায়ী করা হোক। বনগাঁ শহরে খারাপ ফলের কারণ বামেদের ভোট বিজেপির দিকে চলে যাওয়া।’’ অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে থাকা এক কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘এ দিন সকালে জেলা নেতৃত্বের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় আজ বৈঠক হবে না। কারণ হিসাবে বলা হয় বৈঠক উপলক্ষ্যে নাকি প্রচুর কর্মী সমর্থক ভিড় করবেন। বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। এই পরিস্থিতিতে বৈঠক করা সম্ভব নয়।’’ জেলা নেতৃত্বের ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিদ্রোহী কাউন্সিলরদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। কেউ কেউ এমনও জানান, আজ বৈঠক না হলে তাঁরা বিকল্প চিন্তাভাবনা করবেন। সকালে এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘প্রয়োজনে আজই আমরা দল বেঁধে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব।’’

পরে জেলা নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন, বারাসতে জেলা পরিষদের ভবনে বৈঠক হবে। বিধায়ক বলেন, ‘‘১৪ জন কাউন্সিলরই বৈঠকে তাঁদের অবস্থানের পক্ষে মত দিয়েছেন। এ বার যাবতীয় সিদ্ধান্ত দলের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE