Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নিজের বিয়ে ঠেকাল কিশোরী

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, মেয়েটির বাবা মুচলেকা দিয়ে জানিয়েছেন, মেয়েটির আঠেরো বছর না হলে বিয়ে দেবেন না। মেয়ের পড়াশোনাতেও বাধা দেবেন না।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৯ ০১:২৫
Share: Save:

সাতসকালে অচেনা নম্বর থেকে প্রধান শিক্ষিকাকে ফোন করে বছর পনেরোর মেয়েটি বলেছিল, ‘‘দিদি আমি সাবিনা (নাম পরিবর্তিত)। আজই আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। আমি বিয়ে করতে চাই না।’’

দ্বাদশ শ্রেণির সাবিনার ফোন পেয়ে প্রধান শিক্ষিকা ফোন করেন ক্যানিংয়ের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। সেই সংস্থাই দক্ষিণ ২৪ পরগনা চাইল্ড লাইন, বিডিও-র দফতর এবং ডায়মন্ড হারবার থানায় ফোন করে জানালে বন্ধ হয়ে যায় কিশোরীর বিয়ে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, মেয়েটির বাবা মুচলেকা দিয়ে জানিয়েছেন, মেয়েটির আঠেরো বছর না হলে বিয়ে দেবেন না। মেয়ের পড়াশোনাতেও বাধা দেবেন না।

উস্তি থানা এলাকার হটুগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া সাবিনার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ। বাবা বেকার। মা কোনও রকমে টুকটাক কাজ করে পাঁচ মেয়ে নিয়ে সংসার চালান। অভাবের সংসারের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া মেয়ের জন্য তাই বিয়ে ঠিক করে রেখেছিল ডায়মন্ড হারবার থানা এলাকার বাসিন্দা সাবিনার পরিবার। কিন্তু মেয়ে ঘুণাক্ষরেও কিছু টের পায়নি। শুক্রবার রাতে সে বুঝতে পারে বাবা-মা শনিবারই তার বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন।

কোনও রকমে শনিবার সকালে পাড়ার এক বান্ধবীর বাড়ি গিয়ে সেখান থেকে প্রধান শিক্ষিকাকে ফোন করে পড়ুয়ার আর্জি, ‘‘দিদি আমাকে বাঁচান। মগরাহাট ১ নম্বর ব্লকের ‘স্বয়ংসিদ্ধা’ প্রকল্পের সদস্য স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মানসী নস্কর মণ্ডল নিজেদের স্বয়ংসিদ্ধার হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে বিষয়টি জানালে সে খবর দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাইল্ড লাইনকে দেওয়া হয়। মানসী জানান, অভাবের সংসারে মেয়েটি মাধ্যমিকে কোনও গৃহশিক্ষক ছাড়াই ৭০ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল। মানসীদেবীর কথায়, ‘‘মেয়েটি পড়াশোনা করতে চায় বলেই বিয়েটা বন্ধ করতে সুবিধা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Girl Teenage Marriage Canning
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE