তল্লাশি: গোলমালের পরে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ফের উত্তপ্ত বাসন্তী। শনিবার সকালে যুব তৃণমূল ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। চলে বোমা-গুলি। মুজিবর মল্লিক (৫০) নামে এক যুব তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হন আরও ৫ জন। তিন পুলিশ কর্মীও আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শূন্যে গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লাঠি চালানো হয়। গুলি চালানোর কথা অবশ্য পুলিশ মানতে চায়নি।
জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘এই ঘটনায় উভয়পক্ষের ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জখম পুলিশ কর্মীরা ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ পিকেট বসেছে।’’ এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
শুক্রবার বিকেলেও একটি ক্লাবের দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বেধেছিল বাসন্তীর উত্তর চুনাখালিতে। গুলি মারা যান মিঠুন দাস (৪০) নামে এক যুবক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল থেকেই বাসন্তীর ফুলমালঞ্চ পঞ্চায়েতের নির্দেশখালি বাজার দখল করা নিয়ে তৃণমূল এবং যুব তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সকাল থেকে বোমাবাজি, গুলির লড়াই শুরু হয়।
খবর পেয়ে বাসন্তী থানার ওসি অর্ধেন্দুশেখর দে সরকার ও সিআই ক্যানিং রতন চক্রবর্তী পুলিশবাহিনী নিয়ে গ্রামে যান। কিন্তু সেখানে ঢুকতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি-বোমা চালানো হয়। পুলিশের গাড়ি যাতে এলাকায় ঢুকতে না পারে, সে জন্য রাস্তায় বোমা ফেলে রাখা হয়। তৃণমূলের ছোড়া বোমায় গুরুতর জখম হন বাসন্তী থানার এসআই সুব্রত উপাধ্যায়-সহ তিন পুলিশ কর্মী। তৃণমূলের ছোড়া ইটে সুব্রতবাবুর মাথা ফাটে। ওসি অর্ধেন্দুবাবুর পায়ে লাগে। প্রায় আধ ঘণ্টা পুলিশ এলাকায় ঢুকতেই পারেনি।
পরে অবশ্য পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে উভয়পক্ষকে হঠিয়ে দেয়। ঘটনাস্থলে যান এডিজি (সাউথ বেঙ্গল) সঞ্জয় সিংহ, ডিআইজি (পিআর) ভরতলাল মিনা, এসএসপি সুনীল চৌধুরী ও বারুইপুর পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ।
পুলিশ জানিয়েছে, নির্দেশখালি বাজার দখল করতে বাসন্তী ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মন্টু গাজির অনুগামীরা শনিবার বাজারে আক্রমণ চালায়। মারধর করা হয় যুব তৃণমূল কর্মীদেরও। প্রথমে পিছু হঠেন যুবকর্মীরা। পরে শুরু হয় দু’পক্ষের সংঘর্ষ।
ব্লক যুব সভাপতি আমান লস্কর বলেন, ‘‘ওদের অত্যাচারে মানুষ ওদের পাশ থেকে সরে এসেছে। পায়ের তলার মাটি হারাচ্ছে। সে জন্যই এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে মানুষকে ভয় দেখিয়ে এলাকা দখল করতে চাইছে ওরা।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে মন্টু বলেন, ‘‘নির্দেশখালিতে এক সময়ে যাঁরা আমাদের সঙ্গে ছিলেন, তাঁদের ভয় দেখিয়ে ওদের পক্ষে টেনে নেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় এখন আমাদের কোনও সংগঠনই নেই।’’ দলে আরএসপি ও সিপিএম থেকে অনেকেই যোগ দিয়েছেন। তাঁরাই এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে গণ্ডগোল বাধাচ্ছে বলে তাঁর দাবি।
যুব তৃণমূল এবং তৃণমূলের ব্লক কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে শনিবার জানিয়েছেন দলের জেলা সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy