পরিবারের সঙ্গে অনুপকুমার বালা
অচেনা নম্বর থেকে ফোন ভোরবেলা। দেখেই মনটা কেমন কু’ডেকেছিল। হলও তাই। এক ফোনেই এলোমেলো হয়ে গেল কেয়া বালার এত দিনের ঘর-সংসার।
খবর এল, স্বামী অনুপকুমার বালা মারা গিয়েছেন দুর্ঘটনায়।
উত্তর ২৪ পরগনার পলতা শান্তিনগরে থাকতেন অনুপ। উৎসবের মরসুম পার হলেই বাড়ি ফিরবেন বলেছিলেন। ভোরের ফোন অবশ্য কেয়াদের জানিয়ে গিয়েছে, আর ফেরা হবে না এ বাড়ির কর্তার। ঘুম চোখে ফোনে খবরটা পেয়ে পাশে শুয়ে থাকা বছর তেরোর মেয়ে অদিতির দিকে তাকিয়ে ছিলেন কেয়া। মনে হচ্ছিল, পায়ের তলার মাটিটাই বোধহয় সরে গিয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যে দেওর আশিসকে নিয়ে কেয়া বেরিয়ে পড়েন বর্ধমানের দিকে।
উনিশ বছর ধরে অনুপ চাকরি করছেন পুলিশে। তার মধ্যে গত বারো বছর ধরে পোস্টিং বর্ধমানে। পুলিশের গাড়ির চালক ছিলেন। পুজো মিটতে দিন দু’য়েকের জন্য বাড়ি ফিরেছিলেন। বলে গিয়েছিলেন, উৎসবের সময়ে টানা ডিউটি। আর ছুটি পাবেন না। সব মিটিয়ে দিন কয়েকের ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরবেন। মেয়ের সঙ্গে সময় কাটাবেন বলেও কথা দিয়েছিলেন।
অদিতি ব্যারাকপুরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। পুজোর সময়ে কোনও সময়েই বাবাকে কাছে পায় না বলে তার অভিযোগ। এ বার তো বাবা চলে গেলেন অনেকটা দূরে।
শান্তিনগরের বাড়িতে রয়েছেন অনুপের বাবা অজিত, মা কনকলতা। অনুপের ভাই আশিস বলেন, “কী করে দুর্ঘটনা ঘটল, তা জানার ইচ্ছাও হয়নি। কী হবে, সে সব জেনে। মানুষটাই তো আর নেই।’’ দাদাকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন ভাইও। বললেন, ‘‘বাড়িতে বাবা-মা, ওইটুকু ভাইঝি। তাদের সামনে দেহ নিয়ে গিয়ে কী করে যে দাঁড়াব’’— কথা বলতে বলতে বুজে আসে আশিসের গলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy