Advertisement
১১ মে ২০২৪

ভগ্নিপতির বাড়িতে অপমানিত হয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন দিদি, এ বার আত্মহত্যা বোনেরও

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর আটেক আগে উত্তর হাবড়ার বাসিন্দা লিপিকার সঙ্গে বিয়ে হয় অশোকনগরের শঙ্কুর। সে দুবাইতে কাজ করে। ছ’বছরের ছেলে আছে।

লিপিকা দে।

লিপিকা দে।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
অশোকনগর শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৭:৩৭
Share: Save:

শ্বশুরবাড়িতে গলায় শাড়ির ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল তরুণীর। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে অশোকনগরের সুকান্ত সরণি এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম লিপিকা দে (২৬)। শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন লিপিকার মা ভবানী ভৌমিক। স্বামী, দুই ভাসুর ও দুই জায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন থানায়। পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে লিপিকার স্বামী শঙ্কুকে গ্রেফতার করছে। বাকি চার অভিযুক্ত বরুণ দে, প্রিয়াঙ্কা দে, তিমিরবরণ দে এবং মান্তু দে পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর আটেক আগে উত্তর হাবড়ার বাসিন্দা লিপিকার সঙ্গে বিয়ে হয় অশোকনগরের শঙ্কুর। সে দুবাইতে কাজ করে। ছ’বছরের ছেলে আছে। অভিযোগ, বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে সাংসারির ছোটখাটো বিষয় নিয়ে লিপিকার উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ভবানী বলেন, ‘‘নির্যাতনের কথা মেয়ে আমাদের ফোনে জানাত। আমরা গিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে অনুরোধ করলে কয়েক দিন সব স্বাভাবিক থাকত। কয়েক দিন পরে ফের শুরু হত নির্যাতন।’’

অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে চলতি বছরের মে মাসে লিপিকা পুলিশের কাছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেন। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তেরা আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিল। জামিন পায়। ওই ঘটনার পরে লিপিকার উপরে নির্যাতন বেড়ে যায় বলে অভিযোগ।

লিপিকার দিদি বীথিকা সেন তাঁর স্বামীকে নিয়ে বোনের বাড়িতে গিয়েছিলেন সালিশির জন্য। অভিযোগ, সেখানে তাঁদের অপমান করা হয়। কুকুর লেলিয়ে দেওয়া হয়। বাড়ি থেকে চলে না গেলে পুড়িয়ে মারার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।

ওই ঘটনার পরে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হন বীথিকা। হাবড়া থানায় অভিযোগ হয়েছিল সে সময়েও। শঙ্কুকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। সম্প্রতি জামিন পায়।

পরিবারের দাবি, দিদির অপমান ও তাঁর আত্মহত্যা লিপিকা মেনে নিতে পারেননি। লিপিকার ভাই রানা বলেন, ‘‘শ্বশুরবাড়িতে দিদিকেও মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার শেষমেশ মৃত্যুর খবর এল।’’ পুলিশ জানায়, বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ বৃহস্পতিবার দুপুরে লিপিকার দেহ উদ্ধার করে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন খবর দেয়নি। পুলিশের কাছ থেকেই মেয়ের মৃত্যুর খবর জানেন ভবানী। ঘরে পাখার সঙ্গে গলায় শাড়ির ফাঁস দিয়ে দেহ ঝুলে ছিল। ভবানী বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ওদের জন্য দুই মেয়েকে হারাতে হল।’’

মৃতের বাপের বাড়ির লোকজনের দাবি, বৌদির সঙ্গে শঙ্কুর সম্পর্ক ছিল। তা মেনে নিতে পারেননি লিপিকা। সে জন্য অত্যাচার আরও বেড়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE