Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ডাক্তার হতে চায় থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত কিশোর

মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে মারা যান রাজর্ষির বাবা রণজিৎ সাহা। দু’বছর ধরে ক্যানসারে ভুগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মারা গিয়েছেন তিনি।

লড়াই: মায়ের সঙ্গে রাজর্ষি। ছবি: সুজিত দুয়ারি

লড়াই: মায়ের সঙ্গে রাজর্ষি। ছবি: সুজিত দুয়ারি

সীমান্ত মৈত্র
অশোকনগর শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৮ ০০:৩৫
Share: Save:

ছ’মাস বয়স থেকে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। চলছে চিকিৎসা। তবু লড়াই করার মানসিকতা নিয়েই এগিয়ে চলেছে অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ৪ নম্বর স্কিম এলাকার বাসিন্দা ষোলো বছরের কিশোর রাজর্ষি সাহা।

মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে মারা যান রাজর্ষির বাবা রণজিৎ সাহা। দু’বছর ধরে ক্যানসারে ভুগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মারা গিয়েছেন তিনি।

কিন্তু নিজের রোগ বা বাবার মৃত্যু কোনও কিছুই রাজর্ষির এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা হতে পারেনি। এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে পাশ করেছে অশোকনগর বয়েজ সেকেন্ডারি স্কুলের ছাত্র রাজর্ষি। তার স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়া।

কেন?

রাজর্ষির কথায়, ‘‘থ্যালাসেমিয়া, ক্যানসারের মতো রোগে আক্রান্ত গরিব মানুষের পাশে ডাক্তার হয়ে দাঁড়াতে চাই। নিজের ও বাবার ক্ষেত্রে দেখেছি, চিকিৎসার খরচ প্রচুর।’’

সেই লক্ষ্যে নিজের স্কুলেই বিজ্ঞান নিয়ে ভর্তি হচ্ছে রাজর্ষি। কিন্তু রাজর্ষির মা গোটা বিষয়টি নিয়ে খুব আশাবাদী নন। ছেলের লেখাপড়ার ও চিকিৎসার খরচ কোথা থেকে আসবে, তা নিয়ে চিন্তিত মা দীপা সাহা। স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি একটি বুটিক খোলেন। এবং বাড়ির থেকে একটি ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করেন।

দীপাদেবী বলছিলেন, ‘‘স্বামীর চিকিৎসা করাতে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। আত্মীয় স্বজনের কাছে ধারদেনা হয়েছিল। সে সব এখন ধীরে ধীরে শোধ করছি। ছেলের চিকিৎসার জন্য প্রতি মাসে খরচ প্রায় ১২ হাজার টাকা। এ সব সামলে কী ভাবে ছেলের স্বপ্ন পূরণ করব,
জানি না।’’

রাজর্ষির বাবা রণজিৎ একটি বেসরকারি সংস্থায় ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করতেন। টাকা-পয়সা তেমন রেখে যেতে পারেননি। পরিবারসূত্রে জানা গিয়েছে, নবান্ন এবং রাজভবন থেকে মোট ৫৫ হাজার টাকা পেয়েছে তারা। স্থানীয় কিছু সংগঠন ‘ব্লাড কার্ড’ দিয়ে তাদের সাহায্য করে। শিক্ষকরা রাজর্ষিকে লেখাপড়ায় সাহায্য করেন। দীপা বলেন, ‘‘চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উন্নত মানের চিকিৎসা করাতে পারলে ছেলে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু সেজন্য তো প্রচুর টাকার প্রয়োজন। কী ভাবে পারব জানি না।’’

(রাজর্ষির পরিবারের নম্বর: ৯৭৩২১৫১৯২১)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE