রাহুল মিদ্যে
জ্বরে ভুগে বসিরহাটের গ্রামে মৃত্যু হল একজনের। জ্বরে আক্রান্ত ওই এলাকার আরও অনেকে। স্বাস্থ্য দফতরের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর গুলাইচণ্ডী গ্রামে থাকতেন রাহুল মিদ্যে (২০)। কয়েক দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। শুক্রবার তাঁকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। হাসপাতালের পথেই মারা যান রাহুল।
বসিরহাট ১ ব্লকের নিমদাঁড়িয়া-কোদালিয়া এবং শাঁকাচুড়ো-বাগুন্ডি পঞ্চায়েতের উত্তর গুলাইচণ্ডী, ঘুসুড়ি, নারায়ণপুর, শাঁকচুড়ো, গুলাইচণ্ডী-সহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামে বহু মানুষ জ্বরে ভুগছেন। সঙ্গে গাঁটে ব্যথা, বমি, মাথা যন্ত্রণা-সহ নানা উপসর্গ।
উত্তর গুলাইচণ্ডীর ইদ্রিশ আলি মিদ্যের দুই সন্তান। ইদ্রিশ থাকেন মুম্বাইয়ে। সম্প্রতি রাহুল বাবার কাছে গিয়েছিলেন। সেখানেই জ্বরে পড়েন। জ্বর কমেও গিয়েছিল। সপ্তাহখানেক আগে বাড়ি ফেরেন। ফের জ্বর আসে। স্থানীয় চিকিৎসককে দেখানোর পরেও জ্বর না কমায় শুক্রবার দুপুরে তাঁকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার ভোরে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে গাড়ি মালঞ্চে পৌঁছনোর পরে রক্ত বমি শুরু হয় রাহুলের। সঙ্গীদের মধ্যে মুকুল মণ্ডল জানান, নাক থেকেও রক্ত বেরোচ্ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই নেতিয়ে পড়েন রাহুল।
সচেতন: মশারি টাঙিয়ে। ইনসেটে, মৃত রাহুল মিদ্যে। ছবি: নির্মল বসু
এ দিন গ্রামে গেলে সেখানকার বাসিন্দা প্রশান্ত ঘোষ জানান, দু’সপ্তাহ ধরে গ্রামের বহু মানুষ জ্বরে আক্রান্ত। অনেকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি। টাকার অভাবে অনেকে ঠিক মতো চিকিৎসা করাতে পারছেন না। ডেঙ্গি ছড়িয়েছে কিনা, এই আতঙ্কে ভুগছেন সকলে।
খবর পেয়ে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা গ্রামে গিয়েছিলেন। তবে এক দিন মাত্র ব্লিচিং ছড়িয়েই দায়িত্ব শেষ করেছেন। চিকিৎসা শিবির কিংবা লাগাতার ব্লিচিং ছড়ানো বা মশা মারার স্প্রে করার জন্য কারও কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি বলে জানালেন গ্রামবাসী।
শাঁকাচুড়ো-বাগুন্ডি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সাহানুর মণ্ডল বলেন, ‘‘স্থানীয় দু’টি পঞ্চায়েতের কয়েকটি গ্রামের অনেকে প্রবল জ্বরে আক্রান্ত। বিষয়টি বিডিওকে জানানো হয়েছে। যেটুকু ব্লিচিং মিলেছিল, তা ছড়ানো হচ্ছে। গ্রামে চিকিৎসা শিবির জরুরি।’’
বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় জানান, বসিরহাটের অনেক গ্রামে জ্বরের প্রকোপ শুরু হয়েছে। তবে চিকিৎসা শিবির করা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য কর্তাদের দাবি। তাঁরা আরও জানান, বসিরহাট ১ ব্লকের দু’টি পঞ্চায়েত এলাকার গ্রামগুলিতে চিকিৎসক দল গিয়েছিল। সেখানে একটি চিকিৎসা শিবির হয়েছে। অনেকের রক্তের নমুনা বারাসতে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত ভাইরাল জ্বর নাকি ডেঙ্গি, তা বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন দেবব্রতবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy