Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

যন্ত্রপাতির অভাব নিয়েই লড়াইয়ে

জেলাশাসক বিজয় ভারতী অবশ্য জানান, সেখানে শয্যার ব্যবস্থা হচ্ছে। আরও শ’চারেক শয্যা ও খাট কেনার বরাত দেওয়া হয়েছে।

করোনা নিয়ে বৈঠকে প্রশাসনের আধিকারিকেরা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

করোনা নিয়ে বৈঠকে প্রশাসনের আধিকারিকেরা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২০ ০৬:২৮
Share: Save:

অভাব রয়েছে পরিকাঠামোর। তা নিয়েই করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছে জেলা প্রশাসন। করোনা মোকাবিলায় রাজ্যের তরফে পর্যবেক্ষক হিসাবে আসা কৃষি দফতরের সচিব সুনীলকুমার গুপ্তের সঙ্গে বৈঠকে এমন তথ্যই উঠে এসেছে, দাবি জেলা প্রশাসন সূত্রের।

শনিবার দুপুরে ওই বৈঠক শেষে সুনীলবাবু কোনও কথা বলেননি। তবে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষায় জেলায় ‘ইনফ্রারেড থার্মোমিটার’ প্রয়োজন ৭০টি। সেখানে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হাতে রয়েছে মোটে তিনটি। বর্ধমানের সাধনপুরে নির্মীয়মাণ কৃষি দফতরে ১৩৮ শয্যার ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্র এখনও পুরোপুরি তৈরি নয়। জেলাশাসক বিজয় ভারতী অবশ্য জানান, সেখানে শয্যার ব্যবস্থা হচ্ছে। আরও শ’চারেক শয্যা ও খাট কেনার বরাত দেওয়া হয়েছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ দিন বৈঠকে উঠে আসে, ভিন্‌ রাজ্য থেকে বাসিন্দাদের আসার লাইন পড়ে গিয়েছে। ট্রেন-বাস থেকে নামিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করানো হচ্ছে। গ্রাম থেকে খবর পেলে, পুলিশ পাঠিয়ে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে ভিন্‌ রাজ্য বা বিদেশ থেকে আসা বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের ‘হোম কোয়রান্টিনে’ থাকার পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, বিভিন্ন জায়গায় ‘থার্মাল স্ক্রিনিং’-এর পরিকল্পনা নিয়েছে প্রশাসন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, রাজ্য সড়ক ও জাতীয় সড়কের ধারে, কাটোয়া ও কালনা বাসস্ট্যান্ডে ‘থার্মাল স্ক্রিনিং’ করা হবে। এ ছাড়া, সংশোধনাগার, বিভিন্ন সরকারি হোম, অনাথ আশ্রমেও তা করা হবে। এ সূত্রেই ‘ইনফ্রারেড থার্মোমিটার’-এর কথা ওঠে বৈঠকে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, ‘‘ই-টেন্ডারের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে দরপত্র ডাকা হয়েছে।’’

বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে, বড় নার্সিংহোমগুলিকে পাঁচ শয্যার ‘আইসোলেশন’ ওয়ার্ড বাধ্যতামূলক ভাবে তৈরি করতে হবে। বিভিন্ন হাসপাতালে সর্দি, জ্বর ও কাশির উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের মূল দরজা থেকেই চিহ্নিত করে তাঁদের জন্য তৈরি আলাদা জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘বাজার থেকে স্যানিটাইজ়ার কিনতে পারছি না। সে জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে তৈরি করে বিভিন্ন সরকারি দফতরে পাঠানো হচ্ছে।’’ জেলা প্রশাসন আরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে, একশো দিনের কাজের প্রকল্প চালু থাকবে। তবে জমায়েত করে কোনও কাজ করতে নিষেধ করা হয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকা জেলার ১৫ জনের খোঁজ মিলছে না। বৈঠকে এ বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। জেলাশাসক বলেন, ‘‘পুলিশকে ওই ১৫ জনের সম্বন্ধে বিশদ তথ্য দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তাঁদের খোঁজ শুরু করেছে।’’ বৈঠকে জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন) রজত নন্দ, ডেপুটি সিএমওএইচ (২) সুনেত্রা মজুমদারেরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলায় বিভিন্ন হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে ‘আইসোলেশন’ খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্র খোলার প্রস্তুতিও প্রায় সারা। কিন্তু কোথাও ‘ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট’ (সিসিইউ)-এর ব্যবস্থা রাখা হয়নি। সিএমওএইচ-এর আশ্বাস, ‘‘বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তা রয়েছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে কারও শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ হলে সেখানে রেখে চিকিৎসা করানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE