Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মুখ্যমন্ত্রীর সভার পরেই নানা প্রকল্পে হাত পুরসভার

বিরোধীরা অবশ্য বলছেন, বাসিন্দাদের তরফে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানো হলেও এই সব প্রকল্পে এত দিন হাত দেয়নি পুরসভা। মুখ্যমন্ত্রী শহরে এসে তাগাদা না দিলে পুরসভা আদৌ উদ্যোগী হত কি না, প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

দেবপ্রসাদ বাগ (পুরপ্রধান)

দেবপ্রসাদ বাগ (পুরপ্রধান)

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:২৯
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক সভা করে যাওয়ার পরেই শহরের জন্য একগুচ্ছ প্রকল্প হাতে নিল কালনা পুরসভা। প্রায় ১২ কোটি টাকায় শহরের উন্নয়নের পরিকল্পনা হয়েছে বলে জানান পুরসভার কর্তারা। তার মধ্যে নতুন বছর শুরুর আগেই কয়েকটির কাজ সেরে ফেলা হবে বলে তাঁদের দাবি। পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘নতুন বছরে বেশিরভাগ প্রকল্প শেষ করে নাগরিকদের সুন্দর শহর উপহার দিতে চলেছি আমরা।’’

বিরোধীরা অবশ্য বলছেন, বাসিন্দাদের তরফে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানানো হলেও এই সব প্রকল্পে এত দিন হাত দেয়নি পুরসভা। মুখ্যমন্ত্রী শহরে এসে তাগাদা না দিলে পুরসভা আদৌ উদ্যোগী হত কি না, প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। পুরপ্রধানের যদিও দাবি, কয়েকটি পরিকল্পনা পুরসভা আগেই করেছিল। মুখ্যমন্ত্রী উদ্বুদ্ধ করায় তাতে গতি এসেছে।

পুরসভা জানায়, পুরাকীর্তিতে ভরা কালনা শহরে হাজার দশেক বাহারি গাছ লাগানো হচ্ছে। তাতে পর্যটকদের কাছে শহর আরও আকর্ষণীয় হবে। রাতে বাহারি আলোয় শহর সাজতে প্রায় ২ কোটি টাকা খরচে ২২০০ আলো বসানো হচ্ছে রাস্তায়। পুরনো ও নতুন বাসস্ট্যান্ড, মহকুমা হাসপাতাল চত্বর-সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রাস্তায় বসানো হবে রঙিন টালি (‌পেপার ব্লক)। শীঘ্রই এই কাজ শুরু হবে। পুরবিতান পার্কে শিশুদের খেলাধুলোর নানা সামগ্রী বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কালনার নানা রাস্তায় বারবার ছিনতাই, শ্লীলতাহানির মতো দুষ্কর্মের অভিযোগ উঠেছে। পুরসভা জানায়, ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ৮২টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আরও ৯৫টির জন্য টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে জল জমার সমস্যা দূর করতে আমলাপুকুর, কদমতলা-সহ কয়েকটি এলাকা চিহ্নিত করে রাস্তা উঁচু করার চেষ্টা হচ্ছে। এ ছাড়া শ্মশানঘাটে ফোয়ারা, আলো-সহ নানা ব্যবস্থার জন্য অর্থ বরাদ্দ করে কাজ শুরু হয়েছে।

পুর কর্তৃপক্ষ জানান, শহরের ১৮টি ওয়ার্ডে ১২০০ জন দরিদ্র বাসিন্দাকে বাড়ি তৈরির জন্য প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। পুরসভার ক্লিনিকে ১৮ জন চিকিৎসক বিনা পয়সায় চিকিৎসা করেন। ওষুধ দেওয়া হয় পুরসভার তহবিল থেকে। বিভিন্ন পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

নাগরিকদের একাংশের অবশ্য দাবি, শহরের বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে পুরসভা উদাসীন। রাস্তার দু’পাশে খোলা নর্দমা, আঢাকা ভ্যাট, যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকা কেব্‌ল ও বিদ্যুতের তার, তীব্র যানজটের মতো সমস্যাগুলি নিয়ে পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে তাঁদের দাবি। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘মাটির তলায় নর্দমা তৈরির চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে পূর্তমন্ত্রী কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। যানজট বা ছড়িয়ে থাকা তার-কেব্‌ল নিয়েও ব্যবস্থা হচ্ছে।’’

কালনার বিজেপি নেতা সুশান্ত পাণ্ডের বক্তব্য, ‘‘পুরসভা কী বলল, সে নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। কাজ কতটা হল, সেটা দেখার পরেই বিশ্বাস করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE