Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
School

‘জতুগৃহেই’ ঠাসাঠাসি করে চলছে পড়াশোনা

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে স্কুলটি তৈরি হয়েছে। কিন্তু পাঁচ বছরেও পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি।

এ ভাবেই চলে ক্লাস। নিজস্ব চিত্র

এ ভাবেই চলে ক্লাস। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২০ ০২:১৬
Share: Save:

ডাঁই করে রাখা রয়েছে চালের বস্তা। হাত দুয়েক দূরে গ্যাসে রান্না হচ্ছে মিড-ডে মিল। পাশে রাখা রয়েছে প্লাস্টিকের পাত্র। তার মধ্যেই বেঞ্চে গাদাগাদি করে বসে রয়েছে ছাত্রেরা। আক্ষরিক অর্থে ‘জতুগৃহের’ মধ্যেই পঠনপাঠন চলছে মেমারির কৃষ্ণবাজারের হিন্দি জুনিয়র হাইস্কুলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে স্কুলটি তৈরি হয়েছে। কিন্তু পাঁচ বছরেও পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। ইটের গায়ে পলেস্তারা পড়েনি। মিড-ডে মিলের নির্দিষ্ট ঘরও নেই। রান্নার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা জানান, কোনও দিন ক্লাসঘরের বাইরের এক চিলতে বারান্দায় রান্না হয়, আবার কোনও দিন এক দিকে পড়াশোনা চলে, তার পাশেই গ্যাস জ্বালিয়ে রান্না করা হয়। ৭০ জন পড়ুয়া নিয়ে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলটি চলে। এমনকি, স্থায়ী কোনও শিক্ষকও নেই। জানা গিয়েছে, এক অতিথি শিক্ষকের ভরসাতেই চলছে স্কুল। অবস্থা পরিবর্তন করার জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকেরা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে বারবার চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।

স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, দু’টি ঘর রয়েছে। তার মধ্যে একটি ঘরে ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়ারা রয়েছে। ওই ঘরেই ব্ল্যাক বোর্ডের নীচে রাখা আছে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার। পাশের ঘরে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা পরস্পরের দিকে উল্টো মুখ করে বসে রয়েছে। শিক্ষক বালচাঁদ রাম ঘরের দু’প্রান্তে গিয়ে ওই দু’টি ক্লাসের পড়ুয়াদের পড়াচ্ছেন। তাঁর কথায়, “এক ক্লাসে পড়ানো শুরু করলে অন্য ক্লাসের পড়ুয়াদের চুপ করে বসে থাকতে হয়। এতগুলো ছেলেকে সামলানো তো মুখের কথা নয়। কার্যত জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ, স্কুলের জন্য সবই করতে হয়।’’

অভিভাবকদেরও দাবি, শিক্ষকের সংখ্যা, পরিকাঠামো উন্নয়ন না হলে ছেলেমেয়েদের আর স্কুলে পাঠাবেন কি না, ভাবতে হবে তাঁদের। মিড-ডে মিলের রাঁধুনিদেরও দাবি, যে ভাবে রান্নার গ্যাস, অন্য দাহ্যপদার্থ রাখতে তাঁরা বাধ্য হন, তাতে যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

বর্ধমান দক্ষিণের মহকুমাশাসক সুদীপ ঘোষ বলেন, “সংশ্লিষ্ট স্কুল পরিদর্শককে রিপোর্ট দিতে বলা হচ্ছে।’’ মেমারির বিধায়ক নার্গিস বেগমের দাবি, “স্কুলের অবস্থা শিক্ষামন্ত্রীর নজরে আনব। পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE