Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
ডাকঘরে ডামাডোল চলছেই

পরিষেবা অমিল, বিরক্ত চন্দননগর

এ দিন সকালে চন্দননগরের প্রবীণ নাগরিকদের অধিকার রক্ষা মঞ্চ, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এবং সিটু-র ডাকে ওই বিক্ষোভ হয়। গোন্দলপাড়া, বড়বাজার, উর্দিবাজার, পুরশ্রী এলাকার বহু ভুক্তভোগী মানুষ তাতে সামিল হন।

অসন্তোষ: ডাকঘর বন্ধ দেখে বিক্ষোভ গ্রাহকদের। মঙ্গলবার সকালে। ছবি: তাপস ঘোষ

অসন্তোষ: ডাকঘর বন্ধ দেখে বিক্ষোভ গ্রাহকদের। মঙ্গলবার সকালে। ছবি: তাপস ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
চন্দননগর শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৮ ০৩:৪৬
Share: Save:

টানা পাঁচদিন বন্ধ চন্দননগর মহকুমার প্রধান ডাকঘর। চিঠিপত্র আদান-প্রদান থেকে আর্থিক লেনদেন— কিছুই হচ্ছে না। বিপাকে প্রায় ৩০ হাজার গ্রাহক। মঙ্গলবার এরই প্রতিবাদে চন্দননগরের বড়বাজারে ওই ডাকঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রাহকেরা।

এ দিন সকালে চন্দননগরের প্রবীণ নাগরিকদের অধিকার রক্ষা মঞ্চ, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এবং সিটু-র ডাকে ওই বিক্ষোভ হয়। গোন্দলপাড়া, বড়বাজার, উর্দিবাজার, পুরশ্রী এলাকার বহু ভুক্তভোগী মানুষ তাতে সামিল হন। অবিলম্বে ডাকঘরের স্বাভাবিক কাজকর্ম চালুর দাবি ওঠে। পোস্টমাস্টার নেপালচন্দ্র মালিক অবশ্য বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে কোর ব্যাঙ্কিংয়ের ধাঁচে উন্নততর প্রযুক্তির মাধ্যমে পরিষেবা দেওয়া হবে। সেই কাজ চলছে বলেই পরিষেবার ক্ষেত্রে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। শীঘ্রই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’’

গ্রাহকদের অভিযোগ, পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা আগে থেকে জানানো হয়নি। বেশির ভাগ গ্রাহকই তা জানতে পারেননি। বন্ধের দিন দুই আগে একটি ‘ছোট কাগজে’ ইংরেজিতে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। অনেক গ্রাহকই ইংরেজি পড়তে পারেন না অথবা ছোট ছোট হরফ হওয়ায় তা দেখতেই পাননি। অনেকে বিজ্ঞপ্তির অর্থই বোঝেননি। ফলে একের পর এক গ্রাহক এসে ফিরে গিয়েছেন গত কয়েকদিনে।

শ্রমিক কল্যাণ কেন্দ্রের কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একটা ছোট কাগজে ইংরেজিতে নোটিস দেওয়া হল। বহু মানুষ ইংরেজি জানেন না। তাঁরা বুঝবেন কী ভাবে? তাও ওই নোটিস যথেষ্ট আগে দেওয়া হয়নি। সে ক্ষেত্রে মানুষ পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে পারতেন। স্বাধীনতার পর থেকে এমন পরিস্থিতি আগে কখনও তৈরি হয়েছে বলে মনে প়ড়ে না।’’

এ দিনও বৃষ্টি মাথায় করে চন্দননগরের হালদারপাড়া থেকে তপন বন্দ্যোপাধ্যায় পেনশনের টাকা তুলতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘বন্ধ থাকবে জানলে আসতাম না। আমি হৃদরোগী। আজ ডাক্তার দেখানোর কথা ছিল। টাকাটা দরকার তাই এলাম।’’ অমল সাঁধুখা নামে শহরের বাগবাজারের বাসিন্দা এক বৃদ্ধের কথায়, ‘‘পেনশনের টাকায় সংসার চলে। কবে টাকা পাব, ডাকঘরের লোকেরা বলতে পারলেন না।’’ জুটমিলের অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক হিরা খটিকের বাড়ি ভিন্‌ রাজ্যে। তিনি বলেন, ‘‘ডাকঘরের মাধ্যমে বাড়িতে টাকা পাঠাই। কিন্তু ডাকঘরে টাকা থাকতেও হাত-পা বাঁধা। বাড়িতে টাকা পাঠানো খুব দরকার।’’ পোস্টমাস্টার নেপালবাবু অবশ্য জানিয়েছেন, চিঠির আদান-প্রদান মঙ্গলবার থেকেই চালু হয়েছে। পুরো কাজ শেষ হতে আর বেশি সময় লাগবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Post Office Chandannagar Agitation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE