Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ক্লাস বয়কট চলছেই, শিক্ষিকারা গরহাজির

স্কুল সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায় জানান, শিক্ষিকাদের দু’পক্ষের গোলমাল চেষ্টা করেও তিনি মেটাতে পারিনি। সমস্যা সমাধানের জন্য আগামী সোমবার তাঁরা মহকুমাশাসকের কাছে যাবেন।

অবশেষে: স্কুলে মিড-ডে মিল খাচ্ছে ছাত্রীরা। শনিবার।

অবশেষে: স্কুলে মিড-ডে মিল খাচ্ছে ছাত্রীরা। শনিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২০ ০২:১৬
Share: Save:

প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অবশেষে তিন দিন পরে শনিবার মিড-ডে মিল পেল পান্ডুয়ার রাধারানি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। পেল নতুন বইও। তবে, এ দিনও ক্লাস হল না। প্রধান শিক্ষিকা বাদে আর কোনও শিক্ষিকা স্কুলেই পা দিলেন না। প্রথম দু’দিন অবশ্য তাঁরা স্কুলে এসেছিলেন। কিন্তু ক্লাস করাননি।

প্রধান শিক্ষিকা কাবেরী সরকার বলেন, ‘‘বিডিও দায়িত্ব নিয়ে মিড-ডে-মিলের ব্যবস্থা করেছেন। তাঁর উপস্থিতিতে মেয়েদের নতুন বইও দেওয়া হয়েছে। অন্য শিক্ষিকারা না আসায় ক্লাস করা যায়নি।’’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (ডিআই) লক্ষ্মীধর দাস বলেন, ‘‘জেলাশাসককে পরিস্থিতির কথা জানিয়েছি। পঠনপাঠন শীঘ্রই আরম্ভ হবে।

কোনও সমস্যা থাকবে না।’’ শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, এই প্রশ্নের জবাব মেলেনি জেলা শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের কাছে।

প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে অন্য শিক্ষিকাদের কাজিয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে অচলাবস্থা চলছে ওই স্কুলে। শুক্রবার সেখানে যান অতিরিক্ত বিদ্যালয় পরিদর্শক (সদর) সৌরভ পাল। প্রশাসন সূত্রের খবর, তিনি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (ডিআই) লক্ষ্মীধর দাসকে এ ব্যাপারে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন।

প্রশাসন সূত্রের খবর, শনিবার প্রায় এক হাজার ছাত্রী স্কুলে আসে। মহকুমাশাসক (সদর) অরিন্দম বিশ্বাসের নির্দেশে পান্ডুয়ার বিডিও স্বাতী চক্রবর্তী স্থানীয় পঞ্চায়েতের কর্মীদের মিড-ডে-মিল রান্না করতে বলেন। বিডিও-র উপস্থিতিতে ছাত্রীরা ডিমের ঝোল-ভাত খায়। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ প্রধান শিক্ষিকা স্কুল ছুটি দিয়ে দেন। ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী বলে, ‘‘স্কুলে দু’দিন রান্না না হওয়ায় দুপুরে খাওয়া হয়নি। আজ পেট ভরে খেলাম।’’

কবে পড়াশোনা চালু হবে, সেই প্রশ্ন এ দিন অভিভাবকদের মুখে মুখে ফিরেছে। নবম শ্রেণির এক পড়ুয়ার মা রেশমা বিবি বলেন, ‘‘দিদিমণিদের জন্য ক্লাস হচ্ছে না, এটা ভাবা যায়! যা চলছে, তাতে মেয়েদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে।’’

মাস তিনেক আগে কাবেরিদেবী অভিযোগ করেন, অন্য শিক্ষিকারা তাঁকে নিগ্রহ করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি পুলিশেরও দ্বারস্থ হন। তখন থেকে তিনি স্কুলে আসেননি। তিন মাস পরে, গত বৃহস্পতিবার নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন তিনি স্কুলে আসতেই অন্য শিক্ষিকারা বেঁকে বসেন। প্রধান শিক্ষিকা স্কুল থেকে না বেরোলে তাঁরা ক্লাস করাবেন না বলে জানিয়ে স্কুলের গেটের বাইরে রাস্তায় বসে পড়েন। পরের দিন গেটের ভিতরে বসেন। বয়কট চলল এ দিনও।

স্কুল সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায় জানান, শিক্ষিকাদের দু’পক্ষের গোলমাল চেষ্টা করেও তিনি মেটাতে পারিনি। সমস্যা সমাধানের জন্য আগামী সোমবার তাঁরা মহকুমাশাসকের কাছে যাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Student Teacher Clash Pandua
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE