Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কোন্নগরে মাঠ নিয়ে ধুন্ধুমার, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি এলাকাবাসীর

২৬ কাঠার ওই জমিটির মালিক স্থানীয় বাসিন্দা অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মাঠেই পাড়ার ছেলেরা দীর্ঘদিন ধরে খেলাধুলো করে আসছে।

প্রতিবাদ: পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি কোন্নগরে। নিজস্ব চিত্র

প্রতিবাদ: পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি কোন্নগরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোন্নগর শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৯ ০২:০২
Share: Save:

আদালত বলেছে, মাঠ মালিকের। কিন্তু খেলোয়াড়রা তার ‘দখল’ ছাড়তে চান না।

কোন্নগরের হাতিরকুলে একটি মাঠ নিয়ে দু’পক্ষের ওই টানাপড়েন বেশ কিছুদিন ধরে চলছিলই। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে শুক্রবার পুলিশ মাঠের মালিককে দখল দিতে গেলে ধুন্ধুমার হল। প্রথমে বিক্ষোভ, তারপরে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি। বিক্ষোভকারীদের দলে ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর এবং কোন্নগর পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যানও। ধস্তাধস্তিতে দু’জনেই আহত হন। শেষ অবশ্য পুলিশের উপস্থিতিতেই মাঠটি টিন দিয়ে ঘেরা শুরু হয়।

২৬ কাঠার ওই জমিটির মালিক স্থানীয় বাসিন্দা অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মাঠেই পাড়ার ছেলেরা দীর্ঘদিন ধরে খেলাধুলো করে আসছে। সেই মাঠটিরই দখলদারি চাইছিলেন অমিতবাবু। কিন্তু তাতে আপত্তি জানান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ এবং খেলোয়াড়রা। শেষ পর্যন্ত ওই জমির মালিক কলকাতা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন। হাইকোর্ট পুজোর আগেই অমিতবাবুকে জমির দখল ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়। কিন্তু পুজো শেষ না-হওয়ার আগে পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী পাওয়া যাবে না, এই যুক্তিতে পুলিশ তখন এগোয়নি। বিষয়টি আদালতকেও জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।

শুক্রবার সকালে পুলিশ বাহিনী নিয়ে সেখানে যান চন্দননগর কমিশনারেটের অফিসারেরা। তৈরি ছিলেন ক্লাবের ছেলেরাও। তাঁরা সকাল থেকেই এ দিন সেখানে জড়ো হয়েছিলেন। চলছিল খেলাধুলোও। পুলিশ হাজির হতেই এলাকা তেতে ওঠে। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বিক্ষোভকারীদের সরাতে পুলিশ লাঠি চালায়। পুলিশ অবশ্য সে অভিযোগ মানেননি। পুলিশের পাল্টা দাবি, পরিস্থিতি বাগে আনতে পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে পুলিশ ওখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।’’

জখম: রাস্তাতেই শুয়ে উপ-পুরপ্রধান গৌতম দাস। নিজস্ব চিত্র

এ দিন বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা তথা ১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মোনালিসা নাগ। তিনি বলেন, ‘‘এখন শহরাঞ্চলে মাঠই নেই। ছেলেরা ওই মাঠে খেলাধুলো করে। সেটাই প্রোমোটারদের গ্রাসে চলে যাবে? এটা আমরা মানতে পারছি না।’’ একই অভিয়োগ পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান গৌতম দাসেরও। তিনি বলেন ‘‘পুলিশ একটা ছেলেকে মারধর করছিল। আমি বাঁচাতে গেলে ওরা আমাকে মারে। আমরা তো বলছি, প্রয়োজনে ওই জমির দাম আমরা মালিককে মিটিয়ে দেব।’’ পুরসভার চেয়ারম্যান বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘আমি পুরসভার যা রেকর্ড দেখেছি, তাতে ওই জমিটি খেলার মাঠ হিসেবেই চিহ্নিত রয়েছে। প্রয়োজনে আমরা আদালতকে বিষয়টি জানাব।’’ অমিতবাবু অবশ্য গোটা ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Konnagar Clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE