Advertisement
০২ মে ২০২৪
Coronavirus

মৃতের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’, স্বস্তি

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধনেখালির গোপীনাথপুর-২ পঞ্চায়েতের হবিবপুর গ্রামের বছর ছাব্বিশের ওই যুবকের নাম পীযূষ দাস। কর্মসূত্রে তিনি দিল্লিতে থাকতেন। গত ১৬ মার্চ বাড়ি ফেরেন।

প্রতীকী-চিত্র

প্রতীকী-চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২০ ০২:৫৬
Share: Save:

দিল্লি থেকে ফিরে জ্বর, সর্দি-কাশি এবং শ্বাসকষ্টে অসুস্থ হয়ে পড়া ধনেখালির এক যুবকের চিকিৎসা চলছিল চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে। শুক্রবার সকালে তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিতর্ক শুরু হয়। ওই যুবকের পাড়া পড়শিদের আশঙ্কা ছিল, তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েই মারা গিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ তোলেন। সামাজিক মাধ্যমেও সরব হন। ওই রাতেই যুবকের করোনা-পরীক্ষার রিপোর্ট জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হাতে এসেছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’। অর্থাৎ, ওই যুবক করোনায় আক্রান্ত হননি। এ কথা জেনে আতঙ্ক কেটেছে এলাকাবাসীর।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধনেখালির গোপীনাথপুর-২ পঞ্চায়েতের হবিবপুর গ্রামের বছর ছাব্বিশের ওই যুবকের নাম পীযূষ দাস। কর্মসূত্রে তিনি দিল্লিতে থাকতেন। গত ১৬ মার্চ বাড়ি ফেরেন। কয়েক দিন পরে জ্বর, সর্দি-কাশি এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালের করোনা সংক্রান্ত আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। তাঁর লালারসের নমুনা করোনা পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হয়।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য শুক্রবার দাবি করেছিলেন, যুবকের নিউমোনিয়ার চিকিৎসা চলছিল। হঠাৎ হৃদ্‌রোগে তিনি মারা যান। যে হেতু তিনি ভিন্‌ রাজ্য থেকে ফিরেছেন, তাই তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট না-পাওয়া পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাবে না। ওই দিন যুবকের দেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়। যুবকের সংস্পর্শে থাকায় তাঁর বাবা-মাকে সিঙ্গুরে সরকারি কোয়ারান্টিনে রাখা হয়। পরিবারের অন্যদের ১৪ দিন হোম কোয়ারান্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।

পরীক্ষার রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ আসায় স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। শনিবার ওই খবর জানাজানি হতে যুবকের পাড়া-পড়শিরা নিশ্চিন্ত হ‌ন। সকালে হাসপাতালের তরফে পীযূষের দেহ পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সৎকারের সময় যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে জন্য ধনেখালির বিধায়ক তথা মন্ত্রী অসীমা পাত্র এবং জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

মৃতের বাবা বাপি দাস ব‌লেন, ‘‘বেশ কিছুদিন ধরে ছেলে শ্বাসকষ্ট, জ্বর এবং সর্দি-কাশিতে ভুগছিল। বাড়ি ফেরার পরে সমস্যা বাড়ে। ছেলের অসুস্থতাকে ঘিরে যা কাণ্ড হল, তাতে হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। সরকারি পরীক্ষায় প্রমাণিত হল, ছেলের ওই রোগ হয়ইনি।’’ মন্ত্রী অসীমাদেবী বলেন, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক তৈরি না করার আবেদন জানাচ্ছেন বারবার। অথচ, এক যুবকের সাধারণ মৃত্যুকে ঘিরে হুগলির বিজেপি সাংসদ যে ভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্ররোচনামূলক মন্তব্য করেন, তাতে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারত।’’ এ ব্যাপারে লকেটের পাল্টা দাবি, ‘‘করোনাভাইরাস নিয়ে মন্তব্য করিনি। জেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল নিয়ে মন্তব্য করেছিলাম। এতে আতঙ্ক ছড়াবে কেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE