Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
হুগলিতে ১০০ দিনের কাজে গতি নেই
Coronavirus

সংক্রমণের ভয়ে আপত্তি বহু গ্রামে

ধনেখালি ব্লকের ভাণ্ডারহাটি গ্রামের বাসিন্দা বিভাস মালিকের গলাতেই ধরা পড়েছে সেই আতঙ্কের কথা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২০ ০৬:১৪
Share: Save:

সুরক্ষার আশ্বাস দিচ্ছে প্রশাসন। গ্রামবাসীদের আতঙ্ক যাচ্ছে না।

ফলে, সরকারি নির্দেশ রয়ে গিয়েছে খাতায়-কলমে। হুগলিতে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে এখনও গতি আসেনি। পুকুর কাটা, খাল সংস্কারের মতো সমষ্টিগত কাজের কথা উঠলেই বহু গ্রামে আপত্তি উঠছে। কারণ, করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক।

ধনেখালি ব্লকের ভাণ্ডারহাটি গ্রামের বাসিন্দা বিভাস মালিকের গলাতেই ধরা পড়েছে সেই আতঙ্কের কথা। ‘‘পুকুর কাটার কাজ হলে একজনের মাথায় ঝুড়ি তুলে দিতে অন্যজনকে একেবারে তাঁর শরীরের কাছে আসতে হবে। এতে তো করোনা সংক্রমণ ছড়াতেই পারে। মাস্ক, সাবানে আর কতটা আটকাবে?”— প্রশ্ন বিভাস এবং তাঁর মতো আরও অনেকের।

গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম চালিকা-শক্তি ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প। লকডাউনের এই কঠিন সময়ে গ্রামবাসীদের হাতে যাতে টাকা আসে এবং তাঁরা যাতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারেন, সে কথা উল্লেখ করে গত ১৫ এপ্রিল রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে ওই প্রকল্পে কাজ শুরুর নির্দেশিকা জারি হয়। বলা হয়, কঠোর ভাবে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। প্রত্যেক জবকার্ডধারীকে দু’টি করে মাস্ক দিতে হবে। প্রতিটি কাজের জায়গায় শ্রমিকদের বারবার হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত সাবান বা ওই জাতীয় ব্যবস্থা থাকবে।

তা সত্ত্বেও জেলার ১৮টির মধ্যে ১১টি ব্লকেই সমষ্টিগত কাজ এখনও শুরু করা যায়নি বলে জেলা প্রশাসন মেনে নিয়েছে। প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার অনির্বাণ বসু বলেন, “সমষ্টিগত কাজ সব জায়গায় শুরু করা যায়নি। শ্রমিক এবং স্থানীয় মানুষের কিছু ভীতি আছে। বিডিওরা যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ শুরু করার চেষ্টা করছেন। শ্রমিকদের দু’টি করে মাস্ক দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রকল্পে স্থায়ী সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে সেচ এবং জল সংরক্ষণের কাজে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে, শাখা খাল নির্মাণ এবং সংস্কার, ছোট খাল, নিকাশি নালা, জল সংরক্ষণ ব্যবস্থা, সেচ, কূপ, পুকুর, জল শোষণের পরিখা ইত্যাদি নির্মাণ। এ ছাড়া, ব্যক্তিগত উপভোক্তাদের জন্য জমির উন্নয়ন, বৃক্ষরোপণ, নার্সারি ইত্যাদির কাজও হবে।

ব্যক্তিগত উপভোক্তার কাজ জেলার ১৮টি ব্লকেই অল্পবিস্তর শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও এতে বেশি কাজের সুযোগ নেই বলে বিভিন্ন পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে। আর সমষ্টিগত কাজ মাত্র সাতটি ব্লকে শুরু করা গিয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।

যে সব শর্তসাপেক্ষে সমষ্টিগত কাজের কথা বলা হচ্ছে, তা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগও শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন গ্রাম থেকে। পর্যাপ্ত মাস্ক এবং সাবানের জোগান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আরামবাগের তিরোল গ্রামের শেখ জিয়াউল, জিরাটের অমিত রায়। এমনকি, সমষ্টিগত কাজের ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেক প্রধান এবং পঞ্চায়েত স্তরে এই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা নির্মাণ সহায়কদের অনেকেই। যদিও পঞ্চায়েত কর্তারা দাবি করছেন, ওই সংশয় অমূলক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus 100 Days Work Arambagh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE