বৈদ্যবাটী চক নতুনপাড়ার বাসিন্দা সনকা ওঁরাও। ঝড়ে ঘর ভেঙে যাওয়ার ক্ষতিপূরণ পাননি। বি: কেদরনাথ ঘোষ ও দীপঙ্কর দে
অভিযোগ অনেক।
আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য তৃতীয় তথা শেষ দফার আবেদনপত্র জমা নেওয়ার নির্দিষ্ট তারিখ পেরিয়েছে মাঝ অগস্টে। কিন্তু তার পরেও হুগলি জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বঞ্চনার অভিযোগ এবং ক্ষতিপূরণের দাবির শেষ নেই। ক্ষতিপূরণ দুর্নীতির মামলায় সিএজি-কে অডিটের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই তদন্তে কী বেরিয়ে আসে সে দিকে তাকিয়ে রয়েছেন বহু ক্ষতিগ্রস্ত। যাঁরা এখনও ক্ষতিপূরণ পাননি বলে দাবি করেছেন।
আরামবাগের গৌরহাটি-১ পঞ্চায়েতের গৌরী গ্রামের মামণি দলুইয়ের অভিযোগ, ‘‘দু’দফায় পঞ্চায়েত এবং ব্লক অফিসে আবেদন করা সত্বেও ক্ষতিপূরণ মেলেনি। সরাসরি মহকুমাশাসকের কাছে আবেদন করেও লাভ হয়নি।’’ একই অভিযোগ খালোড় গ্রামের সুমিতা রায়, বেউড় গ্রামের মণিকা মালিকদের গলায়। জাঙ্গিপাড়া, চণ্ডীতলা-১, ২, হরিপাল, শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া, পান্ডুয়া, বলাগড়— অভিযোগ সর্বত্রই। হরিপালে এই নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভও কম হয়নি।
ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেরই অভিযোগ, সঠিক অনুসন্ধান না করেই শাসকদলের জনপ্রতিনিধি বা নেতাদের পছন্দের লোকজনকে টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্ষতি না হলেও পাকাবাড়ির মালিক টাকা পেয়ে গিয়েছেন। এই ভাবে প্রচুর ভুয়ো নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ, ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সত্বেও কেন গরিব মানুষের নাম তালিকায় তোলা হয়নি, সেই জবাবও প্রশাসনের তরফে মেলেনি।
আরামবাগের হরিণখোলা-১ পঞ্চায়েতের গ্রামবাসীরা ভুয়ো নামে তালিকা ব্লক দফতর, শাসকদল সহ-বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। বিপর্যয় দফতর সূত্রের খবর, নোটিস পাঠানোয় ওই পঞ্চায়েতের ১৫ জন টাকা ফেরত দিয়েছেন। আরও ১৫ জনকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। হইচই হওয়ায় কিছু লোক অবশ্য স্বেচ্ছায় টাকা জমা দিয়ে গিয়েছেন সরকারি দফতরে। কিন্তু সেই সংখ্যা নগণ্য বলে অভিযোগ।
জেলা জুড়ে কত ভুয়ো লোকের কাছে ক্ষতিপূরণের টাকা পৌঁছয়, কত জন সেই অর্থ ফেরত দিয়েছেন, কত টাকা এ ভাবে উদ্ধার হয়েছে প্রশাসনের তরফে তার পূর্ণাঙ্গ হিসেব অবশ্য মেলেনি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘যাঁদের টাকা পাওয়ার কথা নন, সংশ্লিষ্ট এলাকার বিডিও তাঁদের নোটিস দিচ্ছেন এবং টাকা ফেরত নিচ্ছেন। তবে কত টাকা ফেরত পাওয়া গিয়েছে, জেলায় সেই হিসাব নেই।’’
এই পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরে সরগরম রাজনীতির ময়দানও। বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, অডিট ঠিকঠাক হলেই শাসকদলের ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়বে। শাসকদলের নেতাদের অবশ্য দাবি, স্বচ্ছতার সঙ্গেই সব হয়েছে।
অল্প কিছু ক্ষেত্রে বিচ্যুতি থাকলেও দক্ষতার সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে প্রশাসনের তরফে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy