হেলমেট ছাড়া বাইকে সওয়ার তিন স্কুল ছাত্র। পুলিশ নীরব দর্শক। —নিজস্ব চিত্র।
কারও বয়স ১৪, কারও ১৬। পরনে স্কুল ইউনিফর্ম। দ্রুত গতিতে ছুটছে তাদের মোটরবাইক, কারও বা স্কুটি। হেলমেটের ‘বালাই’ নেই কারও। আর এই বয়সে তো লাইসেন্স থাকার প্রশ্নই ওঠে না।
হাও়ড়া গ্রামীণ জেলায় বেশির ভাগ স্কুলের দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্ররা এ ভাবেই যায়। বাদ প়ড়ে না ছাত্রীরাও। এলাকার বাসিন্দারাও অভিযোগ করছেন, লাইসেন্স ছাড়া মোটরবাইক আরোহীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে রাস্তায়। নজর নেই প্রশাসনের। গাফিলতির অভিযোগ উঠছে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও।
মাস খানেক আগেই শ্যামপুরের বাগান্ডা জটাধারী হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির দুই ছাত্র মোটরবাইক নিয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, বছর ষোলোর ওই দুই ছাত্রের মোটরবাইক নিয়ন্ত্রণ হারায়। উল্টো দিক থেকে আসা একটি গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাদের ভর্তি করানো হয় মহকুমা হাসপাতালে। যদিও ঘটনার পরে শ্যামপুর থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি কোনও পক্ষ।
তবে প্রশ্ন উঠছেই বেলাগাম যান চলাচল নিয়ে। এমনকি স্কুল কর্তৃপক্ষের দায় নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। জটাধারী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তরুণ সামুই বলেন, ‘‘আমরা স্কুল চত্বরের মধ্যে ছাত্রদের মোটরবাইক নিয়ে ঢুকতে দিই না। কিন্তু ছাত্ররা স্কুলের বাইরে মোটরবাইক রেখে আসে। ফলে আমরা কিছুই জানতে পারি না।’’ জখম এক ছাত্রের বাবাও জানিয়েছেন, তিনি নাকি জানতেনই না ছেলে মোটরবাইকে স্কুলে যায়। তাঁর ছেলের বাইক নেই বলেও তিনি দাবি করেছেন। তবে বন্ধুর মোটরবাইকে সে যাতায়াত করত।
উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা তাপসী মালাকার বলেন, ‘‘এই তো দিন কয়েক আগে বাজারে গিয়ে স্কুটির ধাক্কায় হাত ছড়ে গিয়েছে আমার। চালাচ্ছিল একটি বাচ্চা মেয়ে। টাল সামলাতে পারেনি। কী আর বলব তাকে!’’ এমন দুর্ঘটনা হামেশাই ঘটছে। যেখানে আরোহী জখম না হলেও তাদের গাফিলতিতে বিপদে পড়ছেন পথচারী কোনও মানুষ।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, চার দিকে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ –এর প্রচার চলছে। পোস্টার লাগানো রয়েছে বাইক এবং হেলমেট নিয়ে। কিন্তু ছোট ছেলেমেয়েরা সে সবের তোয়াক্কা না করে চলেছে দিনের পর দিন— প্রশাসন নির্বিকার।
হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কর্মসূচি পালন করছি। রাস্তায় প্রতিদিন বাইক চেকিং চলছে। তারপরও বিনা লাইসেন্সে মোটর বাইক চলছে। সচেতন হতে হবে পরিবারকে, স্কুল কর্তৃপক্ষকেও। আমরা আরও সজাগ হওয়ার চেষ্টা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy