জয়ী: পুরস্কার হাতে সুপ্রভাত সরকার। নিজস্ব চিত্র
কঠিন অঙ্ক তাঁর কাছে জলভাত। তাই আরামবাগ বয়েজ স্কুলের ছাত্রদের কাছে জটিল অঙ্কের ত্রাতা শিক্ষক অচ্যুতানন্দ কুণ্ডু। আর তিনি যখন কোনও অঙ্ক নিয়ে নাস্তানাবুদ হন? তাঁর মুশকিল আসান করেন ওই স্কুলেরই প্রাক্তন ছাত্র সুপ্রভাত সরকার। বছর কুড়ির সেই সুপ্রভাত এ বার ফের অস্নাতক স্তরে সারা ভারত গণিত প্রতিযোগিতায় সেরা হলেন। এটা তার স্বীকৃতির তৃতীয় বছর।
চতুর্দশ শতকের গণিতবিদ মাধব-এর নামে মাধব ম্যাথমেটিক্স কমিপিটিশন’-এর যুগ্ম আয়োজক পুনের এস পি কলেজের গণিত বিভাগ এবং মুম্বইয়ের হোমি ভাবা সেন্টার ফর সায়েন্স এডুকেশন। আর্থিক সহয়তায় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনস্থ ‘ন্যাশনাল বোর্ড ফর হায়ার ম্যাথমেটিক্স’। পরীক্ষার বিষয় ক্যালকুলাস বা গণনাপ্রণালী।
আরামবাগের ইন্দিরা পল্লির বাসিন্দা সুপ্রভাত বর্তমানে বরাহনগরের ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র (বিএসসি)। ২০১৭ এবং ২০১৮ সালেও অঙ্কের এই প্রতিযোগিতায় যথাক্রমে ৭৯ এবং ৮৬ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছিলেন সুপ্রভাত। এবার শুধু প্রথমই নয়, দেশের ২৪ টি প্রদেশ থেকে ১০ হাজার প্রতিযোগীকে টপকে ১০০র মধ্যে ১০০-ই পান তিনি।
স্কুলের অঙ্কের শিক্ষক অচ্যুতানন্দবাবু বলেন, ‘‘দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিএসসি-র অঙ্ক করত ছেলেটা। অনেকে গতানুগতিক পদ্ধতিতে অঙ্ক করে। সুপ্রভাত গতানুগতিকের বাইরে গিয়ে অনেক অঙ্ক করেছে।’’ স্কুলের প্রধান শিক্ষক অশোক বৈরাগী বলেন, “এখন তো সকলে গৃহশিক্ষকের কাছে ছুটছে। সুপ্রভাত একমাত্র যে নিয়মিত স্কুলে এসেছে। প্রতিটি ক্লাস করেছে। ও গুণী ছেলে।’’
সুপ্রভাতের বাবা শম্ভুনাথ সরকার খানাকুলের রাজা রামমোহন কলেজের অবসরপ্রাপ্ত পদার্থবিদ্যার শিক্ষক। মা কৃষ্ণা কুন্ডু সরকার আরামবাগ গার্লস হাইস্কুলে অবসরপ্রাপ্ত জীববিদ্যার শিক্ষিকা। সু্প্রভাত তাঁদের একমাত্র সন্তান। ছেলের এই কৃতিত্বে বাবা বলছেন, “ছোটবেলা থেকে মনের আনন্দে অঙ্ক করেছে সুপ্রভাত। তবে প্রতিযোগিতায় সেরা হওয়া বড় কথা নয়। পরিমিতিবোধ তৈরি হয় যেন। ভাল মানুষ হওয়াটাই বড় কথা।’’ সু্প্রভাত বলেন, ‘‘প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়াটাই বড় কথা। নতুন কিছু শিখতে আমার ভাললাগে। অঙ্ক নিয়ে গবেষণা করতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy