—ফাইল চিত্র।
তেমন কোনও কাজ নেই।
কোথাও প্রধানরা এসে পঞ্চায়েত ভবনে শুধু বসে থাকছেন। কেউ কেউ শুধু শংসাপত্র বিলোচ্ছেন! অনেক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, কর্মাধ্যক্ষ ভবনে আসাই বন্ধ করে দিয়েছেন। তাঁদেরও কাজ নেই।
লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর দু’সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও হাওড়ায় গ্রামোন্নয়নের কাজ সে ভাবে শুরুই হল না। অথচ, বহু প্রকল্পের টাকা এসে পড়ে রয়েছে।
কিন্তু কেন? পঞ্চায়েতগুলির একটা বড় অংশ অচলাবস্থার জন্য দায় চাপিয়েছে ব্লক প্রশাসনের ঘাড়ে। একাধিক পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, উন্নয়মূলক কাজের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা থাকে বিডিও-দের। তাঁরাই প্রধানদের নিয়ে নিয়মিত উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বৈঠক ডাকেন। কিন্তু নির্বাচনী বিধিনিষেধ কেটে যাওয়ার পরেও বিডিও-রা সেই বৈঠক ডাকছেন না। বিডিওদের দাবি, বৈঠক ডাকার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের থেকে তাঁরা এখনও কোনও নির্দেশ পাননি।
পঞ্চায়েতের কাজ থমকে যাওয়ার বিষয়টি অবশ্য মানতে রাজি হননি পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত দফতরের হাতে এমন অনেক কাজ আছে, যেগুলি পঞ্চায়েতকে সরাসরি সঙ্গে না নিয়েও করা যায়। আমরা সেগুলিই এখন বেশি করে করছি। তবে প্রধানদের নিয়ে বিডিওদের শীঘ্রই উন্নয়মূলক কাজের বৈঠক ডাকতে বলা হয়েছে।’’
গ্রামোন্নয়নের কাজ মূলত পঞ্চায়েতই করে। রাস্তাঘাট তৈরি ও সংস্কার, নলকূপ বসানো, পুকুরের পাড় বাঁধানো প্রভৃতি কাজ সরাসরি পঞ্চায়েতের সুপারিশ ও তত্ত্বাবধানে হয়। হাওড়ার ১৫৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে বেশিরভাগই আছে তৃণমূলের দখলে। ১৪টি পঞ্চায়েত সমিতির সব ক’টিও তৃণমূলের দখলে রয়েছে। কিন্তু উন্নয়নমূলক কাজ শুরু না-হওয়ায় বিশেষ করে রাজ্যের শাসক দলের দখলে থাকা পঞ্চায়েতের কর্তাদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। একটি পঞ্চায়েতের প্রধান বলেন, ‘‘আমরা নিয়মিত কার্যালয়ে আসছি। কিন্তু মূলত বিভিন্ন ধরনের শংসাপত্র দেওয়া ছাড়া হাতে আর কোনও কাজ নেই।’’
চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশন, তৃতীয় রাজ্য অর্থ কমিশন, প্রভৃতি খাতে পঞ্চায়েতের হাতে বিপুল টাকা আসে। সেই টাকাতেই গ্রামোন্নয়নের কাজ হয়। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের প্রথম কিস্তির টাকা এসে গিয়েছে এপ্রিল মাসে। কিন্তু বহু পঞ্চায়েতে সেই টাকার একটা বড় অংশ খরচ হয়নি। অথচ, সময়ে সেই টাকা খরচ না-হলে ‘ইউসি’ (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) পাওয়া যায় না। আর ‘ইউসি’ না-পাওয়া গেলে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে দ্বিতীয় কিস্তির যে টাকা আসার কথা, তা আটকে যেতে পারে। এক প্রধান বলেন, ‘‘উন্নয়মূলক কাজের বৈঠক ডাকা হলে সেখানে টাকা খরচের ব্যাপারে খুঁটিনাটি আলোচনা হয়। কিন্তু বৈঠকই তো হচ্ছে না।’
সুব্রতবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, বিভিন্ন প্রকল্পে অগ্রগতির হার বেশ সন্তোষজনক। তবে, পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর, মন্ত্রী যে সব কাজের কথা বলছেন, সেগুলি রুটিন। তার মধ্যে আছে বাংলা আবাস যোজনা, ১০০ দিনের কাজ, বার্ধ্যক্য ভাতা, খাদ্যসাথী প্রকল্পের নতুন কার্ড ইত্যাদি। এই প্রকল্পগুলির সঙ্গে পঞ্চায়েতের সরাসরি সম্পর্ক নেই। যেমনটি আছে চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশন, তৃতীয় রাজ্য অর্থ কমিশন প্রভৃতিতে। এই কাজগুলির উপরেই গ্রামোন্নয়নের কাজ অনেকটা নির্ভর করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy