Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Covid 19

শ্মশানে নেবে কে, স্বামীর দেহ নিয়ে ১৬ ঘণ্টা বসে স্ত্রী

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন বছর ৬৫-র ওই বৃদ্ধ। চার মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় স্ত্রীকে নিয়ে একাই থাকতেন তিনি।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২০ ০৩:৪৪
Share: Save:

করোনায় আক্রান্ত হয়ে স্বামীর মৃত্যু হয়েছিল শুক্রবার রাত ১১টায়। স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশের টানাপড়েনে সৎকার না হওয়ায় প্রায় ১৬ ঘণ্টা স্বামীর দেহ আগলে বসে থাকতে হল স্ত্রীকে। অবশেষে শনিবার বিকেল ৩টে নাগাদ পুরসভা শববাহী গাড়ি দেওয়ায় মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা হয়।

এ দিন এই ঘটনা ঘটেছে মধ্য হাওড়ার নেতাজি সুভাষ রোড সংলগ্ন হালদারপাড়ায়। এলাকার বাসিন্দা ও মৃতের আত্মীয়দের অভিযোগ, রাত থেকে পুলিশ ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে বার বার ফোন করা হলেও দেহ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়নি। হাসপাতালের চিকিৎসকের কাছ থেকে ডেথ সার্টিফিকেট পেতেও হিমশিম খেতে হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকি, স্থানীয় বিধায়ক ও রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করারও প্রায় চার ঘণ্টা পরে পুরসভার শববাহী গাড়ি নিয়ে এসে স্বাস্থ্য দফতরের পাঠানো ডোম শিবপুর শ্মশানে দেহ নিয়ে যান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন বছর ৬৫-র ওই বৃদ্ধ। চার মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় স্ত্রীকে নিয়ে একাই থাকতেন তিনি। মৃতের এক জামাই জানান, স্টেন্ট লাগানোর জন্য দু’সপ্তাহ আগে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরেই তাঁর শ্বশুরের কোভিড পরীক্ষা করানো হয়। সেই রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। ওই ব্যক্তির যে হেতু করোনার কোনও উপসর্গ ছিল না, তাই তাঁকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১৪ দিন বাড়িতে রাখার পরে ফের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।

মৃতের জামাই বলেন, ‘‘এর পরে আমরা ওঁকে বাড়িতে নিয়ে আসি। তার পাঁচ দিনের মাথায় শুক্রবার রাত ১১টায় তিনি মারা যান। এর পরে হাসপাতাল, পুলিশ— সব জায়গায় ফোন করেছি। কিন্তু কেউ মৃতদেহ নিতে আসেনি। চরম হয়রানি পোহাতে হয়েছে আমাদের।’’

এলাকার বাসিন্দারা জানান, ওই রাতে কোনও ব্যবস্থা করতে না-পেরে পরের দিন বিষয়টি সমবায়মন্ত্রীকে জানানো হয়। তিনি খবর দেওয়ার পরে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে হাওড়া পুরসভার শববাহী গাড়ি নিয়ে এসে মৃতদেহ তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাতে ডোম পাওয়া যায়নি। তাই স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আমাদের প্রশ্ন, বাড়িতে থাকা কোভিড রোগী মারা গেলেও কি পুলিশকে নিয়ে যেতে হবে? স্বাস্থ্য দফতরের কি কোনও দায়িত্বই নেই?’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘অত রাতে কর্মী পাওয়া যায়নি বলে পুলিশকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারাও ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশকে আমরা সব ধরনের সুরক্ষা-সরঞ্জাম ও পোশাক দিতে চেয়েছিলাম। পুলিশ তা-ও নিতে চায়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Covid 19 Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE