হুগলি মাদ্রাসার ঐতিহ্য ফেরাতে উদ্যোগী হল জেলা পরিষদ। মঙ্গলবার জেলা পরিষদে মাদ্রাসা নিয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি করে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি মেহবুব রহমান বলেন, ‘‘বৈঠকে নেওয়া প্রস্তাব রাজ্যে পাঠানো হবে। কার্যকর হলে মাদ্রাসাটির ঐতিহ্য ফিরবে বলে আমরা আশাবাদী।’’
দু’শো বছরের পুরনো এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন হাজি মহম্মদ মহসিন। এখানে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হত। পরিকাঠামোগত সমস্যার জন্য কয়েক দশক ধরে সরকারি মাদ্রাসাটি ধুঁকতে শুরু করে। বর্তমানে সেটি শুধু কাগজ-কলমে চালু আছে বললেই চলে।
জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, আলোচনায় ঠিক হয়, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে পুরনো ব্যবস্থা অনুযায়ী বাংলা মাধ্যমে পঞ্চম শ্রেণি ও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়া হবে। ছাত্রের যাতে অভাব না হয়, সে জন্য বিভিন্ন মাদ্রাসার সাহায্য চাওয়া হয়। শিক্ষক নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হবে। শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ গোপাল রায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মাদ্রাসাটির ঐতিহ্য ফেরাতে চান। আমরাও বদ্ধপরিকর। সংখ্যালঘু সমাজের জন্য এই পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হবে।’’ তিনি জানান, পড়ুয়ারা যাতে এখানে থেকে পড়াশোনা করতে পারে, জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় বসতে পারে— এমন নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বলরামবাটীর মোস্তাফাপুর হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ওবাইদুর রহমান বলেন, ‘‘হুগলি মাদ্রাসায় ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা চালু হলেও সাড়া মেলেনি। আগের মতো বাংলা মাধ্যম চালু করা জরুরি। প্রয়োজনে দু’টোই চলুক। পড়ুয়াদের সর্বভারতীয় পরীক্ষার জন্যও তৈরি করতে হবে।’’
খানাকুলের নবাবিয়া মিশনের সম্পাদক শেখ শাহিদ আকবর বলেন, ‘‘পড়ুয়ার অভাব হবে না। প্রত্যন্ত গ্রামেও সব পড়ুয়াকে জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। জেলা সদরে তো ছাত্র পেতে সমস্যা হওয়ার কথাই নয়। আগে শিক্ষক নিয়োগ করা হোক। উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি হোক। প্রয়োজনে আমরা ছাত্র পাঠাব।’’
বছর কয়েক আগে বিজেপি নেতারা এখানে এসে মাদ্রাসাটি পুনরুজ্জীবনের দাবি তোলেন। এর পরেই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচানোর আশ্বাস দেন। কিন্তু কাজ না হওয়ায় বিভিন্ন সংখ্যালঘু সংগঠন আন্দোলনে নামে। প্রশাসন সূত্রের খবর, পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই মাদ্রাসার পুনরুজ্জীবন নিয়ে উদ্যোগী হন। কয়েক মাস আগে প্রথম শ্রেণি থেকে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা চালু হয়। কিন্তু তাতে পরিস্থিতির বিশেষ হেরফের হয়নি। এ বার অবস্থা বদলায় কি না, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy