Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ময়নাগড় রাজবাড়ি ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়তে উদ্যোগ

দিঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর, মন্দারমনির মতো জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলি তো আছেই। ইতিহাস প্রসিদ্ধ ময়নাগড়কে সেই তালিকায় এনে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন।

রাজবাড়ির এই পরিখায় পর্যটকদের জন্য নৌবিহারের পরিকল্পনা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

রাজবাড়ির এই পরিখায় পর্যটকদের জন্য নৌবিহারের পরিকল্পনা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:০০
Share: Save:

দিঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর, মন্দারমনির মতো জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলি তো আছেই। ইতিহাস প্রসিদ্ধ ময়নাগড়কে সেই তালিকায় এনে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন।

ময়না রাজপরিবারের বাসস্থান ময়নাগড়ের ঐতিহাসিক গুরুত্ব যেমন রয়েছে, তেমনই পরিখাবেষ্টিত এই গড়ের চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আকর্ষণীয়। ঐতিহাসিক গুরুত্বের কারণে ময়না গড়কে ২০০৬ সালে রাজ্য হেরিটেজ কমিশন ‘হেরিটেজ সাইট’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। প্রায় ১২ বছর আগে হেরিটেজ সাইটের স্বীকৃতি পেলেও এর সংরক্ষণ নিয়ে তেমন কার্যকরী পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ।

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই স্থানের সংরক্ষণ ও সৌন্দর্যায়নের মাধ্যমে পর্যটক-গবেষকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে গড়কে ঘিরে থাকা মজে যাওয়া পরিখার সংস্কার শুরু হয়েছে। এ ছাড়া রাস্তা উন্নয়ন, চারারোপণ-সহ সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হয়েছে। বিশ্রামাগার, বিনোদন উদ্যান, আলোর ব্যবস্থা, পানীয় জল, ফুড-প্লাজা এবং পরিখায় নৌকা বিহারের (প্যাডেল বোট) পরিকল্পনা করা হয়েছে।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা সদর তমলুক শহর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে কাঁসাই নদীর তীরে ময়নাগড়। ধর্মমঙ্গলের কাহিনীখ্যাত লাউসেনের সঙ্গে ময়নাগড়ের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। বর্তমানে ‘বাহুবলীন্দ্র’ রাজপরিবারের বাসস্থান এই ময়নাগড়। গড়ের মধ্যে রাজবাড়িটি দ্বীপের মতো। রাজবাড়িতে পৌঁছতে নৌকায় পরিখা পার হতে হয়। গড়ে রাজবাড়ি ছাড়াও রয়েছে রাজপরিবারের উত্তরসূরীদের তৈরি বাড়ি। রয়েছে রাজবাড়ির কুলদেবতা শ্যামসুন্দর জিউ ও লোকেশ্বর জিউর মন্দির। প্রতি বছর রাসপূর্ণিমায় মেলা হয়। মেলার শুরুতে ময়নাগড়ের পরিখায় শ্যামসুন্দর জিউ নৌ-বিহার করে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা-সহ রাসমঞ্চে যান। রাস উৎসব দেখতে কয়েক হাজার মানুষের ভিড় হয় ময়নাগড়ে।

গড়ের চত্বরে রয়েছে ধর্মঠাকুরের থান। রয়েছে মোহন্তর সমাধিস্থল ও পিরের মাজার। তাই শুধু ঐতিহাসিক গুরুত্বই নয়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নিদর্শন হিসেবেও তুলে ধরা হয় ময়নাগড়কে।

রাজপরিবারের সদস্য সিদ্ধার্থ বাহুবলীন্দ্র বলেন, ‘‘ময়নাগড়ের ঐতিহাসিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে জেলা প্রশাসন এই উদ্যোগ খুবই সদর্থক।’’

সম্প্রতি জেলা প্রশাসন এই বিষয়ে বৈঠক করে পরিকাঠামোর উন্নয়নে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়ে তা রূপায়ণের জন্য বিভিন্ন দফতরকে দায়িত্ব দিয়েছে। ময়না পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি তথা নবনির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্য শেখ সাজাহান বলেন, ‘‘পরিখার সংস্কার-সহ বৃক্ষরোপণ, সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে একশো দিনের প্রকল্পে। পর্যটকদের জন্যও নানা পরিকাঠামো তৈরি হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Maynagar Tourism Centre Tourist Spot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE