Advertisement
০৭ মে ২০২৪
জমায়েত দেখলেই লাঠিপেটা
Coronavirus

লকডাউনের নিয়ম ভাঙায় গ্রেফতার ১০

নন্দকুমারের ব্যবত্তারহাটে সকাল ৯ টা নাগাদ জমজমাট হাটে পুলিশ জানিয়ে দেয় ১০টার মধ্য হাট বন্ধ করতে হবে। এর ফলে জিনিসপত্র কেনার হুড়োহুড়ি পড়ে যায়।

জমায়েত রুখতে টহলদারি। তমলুকে।

জমায়েত রুখতে টহলদারি। তমলুকে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২০ ০২:২৪
Share: Save:

লকডাউনের সকালেও জেলার বিভিন্ন এলাকার হাটে-বাজারে নজরে এল থিকথিকে ভিড়। রাস্তায় ঘুরে বেড়ালেন মানুষজন। আর তাঁদের আটকাতে রণংদেহি মেজাজে দেখা গেল পুলিশকে। রাস্তাঘাটে বার হওয়া লোকজনকে লাঠিপেটা থেকে করা হল গ্রেফতার।

নন্দকুমারের ব্যবত্তারহাটে সকাল ৯ টা নাগাদ জমজমাট হাটে পুলিশ জানিয়ে দেয় ১০টার মধ্য হাট বন্ধ করতে হবে। এর ফলে জিনিসপত্র কেনার হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। পুলিশের হস্তক্ষেপে সকাল ১০টা নাগাদ মাঝপথে হাট বন্ধ হয়ে যায়। বিকেলে তমলুক কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড চত্বরে চায়ের দোকানে একদল যুবক জটলা করে বসেছিল। তমলুক থানার পুলিশ গিয়ে লাঠিচার্জ করে তাঁদের হটিয়ে দেয়। কয়েক জনকে গ্রেফতারও করে। মেচেদা বাসস্ট্যান্ডে বিনা প্রয়োজনে ভিড় করা লোকজন ও মোটরসাইকেল চালকদের লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে পুলিশ। চণ্ডীপুর বাজারেও ভিড় হটাতে নামে পুলিশ বাহিনী। পুলিশ সূত্রের খবর, এখন পর্যন্ত তমলুকে চার জন, কোলাঘাটে দু’জন, পাঁশকুড়ায় দু’জন, নন্দকুমার ও চণ্ডীপুরে একজন করে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তমলুকের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘করোনা সতর্কতামূলক প্রচারের পরও বেশ কিছু জায়গায় সরকারি নির্দেশিকা উপেক্ষা ভিড় জমানোর অভিযোগ আসছিল। পুলিশ নিয়মভঙ্গের অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে।’’

কাঁথিতে সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় লোক চলাচল দেখা গিয়েছে। শহরের অভ্যন্তরে বড় ডাকঘর মোড়, ক্যানালপাড়, চৌরঙ্গি, দারুয়া এলাকায় টোটো এবং অটো বিক্ষিপ্ত ভাবে চলাচল করে। কাঁথি মহকুমা সদর হাসপাতালের সামনে একাধিক খাবারের দোকান ও চায়ের দোকান, স্কুল বাজার এলাকায় একটি জিমন্যাসিয়ামও খোলা ছিল। বেলা গড়ালে শহরের ভিতর জমায়েত ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে সিভিক ভলান্টিয়ার এবং পুলিশকর্মী পিকেটিং করে।

তবে লকডাউন ঘোষণার পর প্রথম সকালে সবচেয়ে বেশি অরক্ষিত ছিল জেলার অন্যতম বৃহৎ কাঁথির সুপার মার্কেট। সেখানে মাছ এবং আনাচের বাজার খোলা ছিল। তাই সকাল থেকে সাধারণ ক্রেতাদের ভিড় ছিল বাজারে চোখে পড়ার মত। ক্রেতাদের মধ্যে সামাজিক দূরত্বটুকু চোখে পড়েনি। পরে শহরের ক্যালটেক্স মোড় এলাকায় নাকা চেকিং শুরু করে কাঁথি থানার পুলিশ। সেখানে বেশ কয়েকটি বাইক আটক করে তারা।

হলদিয়ায় আবার অন্য সমস্যায় পড়েছেন মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেখানে করোনা উপসর্গ না দেখা গেলেও প্রতিদিন ভিড় করছেন ভিন রাজ্য থেকে আসা বহু মানুষ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী, ওই সব ব্যক্তিদের প্রথমে হোম আইসোলেশনে থাকার কথা বলা হয়েছে। ১৪ দিন পরে করোনার প্রাথমিক উপসর্গগুলো দেখা দিলে তখনই হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

কিন্তু বর্তমানে হাসপাতালে যে ভিড় বাড়ছে, তাতে করোনার সংক্রমণের সম্ভাবনাকেই উস্কে দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে সুপার সুমনা দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘যাঁর কিছুই হয়নি, তিনি এই ভিড়ের মধ্যে এসে হয়তো ভাইরাসটাকে নিজের শরীরে নিয়ে নিচ্ছেন। তাঁর থেকে পরিবারের বাকি সব সদস্যদের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। মানুষের বোঝা উচিত যে, যাঁরা বাইরে দেশ ও রাজ্য থেকে আসছেন, তাঁরা সবাই করোনা নিয়ে আসছেন না। ১৪ দিন হোম আইসোলেশনে থাকুন। এর মধ্যে উপসর্গ দেখা দিলে হাসপাতালে আসুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE