Advertisement
১০ মে ২০২৪
Coronavirus

চাল-আলু বিলিতে ধন্দে স্কুল কর্তৃপক্ষ

লিখিত নির্দেশ দিয়ে জানানো হয়েছে, শনিবার রাত থেকেই চাল-আলু বিলি শুরু করতে হবে। প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে মঙ্গলবারের মধ্যে।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২০ ০১:৩০
Share: Save:

করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই মিড ডে মিলের চাল, আলু বিলি নিয়ে দোটানায় পড়ল স্কুলগুলি।

লিখিত নির্দেশ দিয়ে জানানো হয়েছে, শনিবার রাত থেকেই চাল-আলু বিলি শুরু করতে হবে। প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে মঙ্গলবারের মধ্যে। কিন্তু একে রাত থেকে বিলি শুরু করা, তায় রবিবার স্কুল খোলা রাখার নির্দেশে ধন্দে পড়েছেন শিক্ষকেরা। তাঁদের একাংশের প্রশ্ন, আজ, রবিবার ‘জনতা কার্ফু’র মধ্যে বিলি-বণ্টন কীভাবে হবে!

করোনা সতর্কতার জেরে রাজ্যের সব প্রাথমিক ও হাইস্কুলে আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ছুটিতে বন্ধ মিড-ডে মিল। তাই পড়ুয়াদের অন্তত চাল এবং আলু দেওয়ার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। শুক্রবার এ নিয়ে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের সচিব নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়েছেন, আগামী সোমবার থেকে ওই চাল, আলুর বিলির ব্যবস্থা করতে হবে। চাল দেবে সরকার। তবে বাজার থেকে আলুর ব্যবস্থা করতে শিক্ষকদের। সে জন্য আলু কিনতে কিলোগ্রাম পিছু ১৮ টাকা করে বরাদ্দ হয়েছে।

শুক্রবার ওই সরকারি নির্দেশের কথা জানার পরে এ দিন সকালে আলু কেনার জন্য স্থানীয় বাজারগুলিতে ছোটেন জেলার অধিকাংশ স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কারণ, করোনায় বাজার বন্ধের গুজবে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার থেকেই আলু, পেঁয়াজের চাহিদা তুঙ্গে। সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীদের একাংশ দাম দ্বিগুণ করে দিয়েছন। এই পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশিকা মেনে ১৮ টাকা কিলো দরে আলু আদৌও পাওয়া যাবে কি না, সে নিয়ে চিন্তিত শিক্ষকেরা। নন্দকুমারের কল্যাণচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপন মণ্ডল বলেন, ‘‘মিড-ডে মিলের জন্য বরাদ্দ চাল স্কুলে মজুদ থাকলেও আলু ছিল না। তাই এ দিন নন্দকুমার বাজারে ১০ বস্তা আলু কিনেছি। ৫০ কিলোগ্রাম আলুর বস্তা ৯০০ টাকায় কিনেছি। কিন্তু ওই বস্তা বহনের জন্য আরও টাকা হয়েছে।’’

এর পরেই শিক্ষা দফতরের তরফে আর একটি বার্তা আসে। তাতে জানানো হয়, রবিবারও স্কুল খোলা রেখে আলু-চাল বিলির কাজ চালানো যাবে। এতে কিছুটা বিড়ম্বনায় শিক্ষকেরা। এ ব্যাপারে নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক বিকাশ মণ্ডল বলেন, ‘‘করোনা সতর্কতায় সরকার একদিকে জমায়েত এড়াতে নির্দেশ দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী রবিবার জনতা কার্ফু পালন করার জন্য বলেছেন। অথচ রাজ্য সরকার চাল আলু-বিলির জন্য রবিবারেও স্কুল খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিপদের মুখে ঠেলে দেওযা হচ্ছে। আমরা রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আমিনুল আহসান অবশ্য জানাচ্ছেন, শনিবার থেকেই কিছু স্কুলে আলু-চাল বিলি শুরু হয়ে গিয়েছে। এ দিন কোলাঘাটের সাগরবাড় বান্ধব সত্যেশ্বর বিদ্যাভবনে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের চাল-আলু দেওয়া হয়। ছিলেন কোলাঘাটের বিডিও মদন মণ্ডল এবং কোলাঘাট-১ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক পরিমল নস্কর।

আমিনুল বলেন, ‘‘শুক্রবারই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্কুলগুলিতে চাল ও আলু দেওয়ার ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। এদিন জেলার ১৪ শতাংশ পড়ুয়ার চাল ও আলু পেয়েও গিয়েছে। রবিবার জেলার সব অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক ও স্কুল খোলা থাকবে। যদি পড়ুয়াদের অভিভাবকরা স্কুলে আসেন, তাঁদের চাল ও আলু দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সোমবার ও মঙ্গলবারের মধ্যেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE