Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

আধ ঘণ্টার ঝড়ে ক্ষতি ফসলের

আধ ঘণ্টার ঝড় আর শিলা বৃষ্টি। তাতেই নষ্ট হয়ে গেল বিঘার পর বিঘা খেতের ফসল। রবিবার বিকেলের ঝড়-বৃষ্টিতে ঝাড়গ্রাম মহকুমার জামবনি ও বিনপুর ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় চাষের ক্ষতি হয়েছে বলে খবর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম ও ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৭ ০১:২৩
Share: Save:

আধ ঘণ্টার ঝড় আর শিলা বৃষ্টি। তাতেই নষ্ট হয়ে গেল বিঘার পর বিঘা খেতের ফসল। রবিবার বিকেলের ঝড়-বৃষ্টিতে ঝাড়গ্রাম মহকুমার জামবনি ও বিনপুর ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় চাষের ক্ষতি হয়েছে বলে খবর। শুধু ফসল নয়, লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে গোয়ালতোড়ের একাধিক গ্রামও।

ফাল্গুনের শুরুতে এমন ক্ষতির জন্য প্রস্তুত ছিলেন না চাষিরা। জামবনি ব্লকের ৮ নম্বর আঞ্চলের কুমরি গ্রামে রবিবার বিকেলে করলা বাগান পরিচর্যার কাজ করছিলেন লক্ষ্মণ মাহাতো। দক্ষিণ আকাশে কালো মেঘ দেখেই প্রমাদ গুনেছিলেন তিনি। আশঙ্কা সত্যি হল। বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত ঝড়ে লক্ষ্মণবাবুর সাড়ে তিন বিঘার করলা মাচা ছাড়খাড় হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম সোমবার কুইন্টাল পাঁচেক করলা বিক্রি করব। মহাজনের সঙ্গে কথাও হয়েছিল। কিন্তু আধ ঘণ্টার ঝড় বৃষ্টি সব শেষ করে দিল। কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি

হয়ে গেল।’’

ক্ষতির হিসাব দিয়েছেন ওই অঞ্চলের কৃষি প্রযুক্তি সহায়ক কল্যান বেরাও। তাঁর কথায়, ‘‘অঞ্চলের প্রায় ৯৯ হেক্টর জমিতে ১৪ মেট্রিক টন আনাজ নষ্ট হয়েছে বলে এখনও পর্যন্ত খবর পেয়েছি। প্রায় ১১ কোটি টাকার মতো ক্ষতি। আমরা হিসেব পাঠাচ্ছি উপর মহলে।’’

লাভের আশায় বিঘা তিনেক জমিতে তরমুজ লাগিয়েছিলেন অনন্ত মাহাতো, কমলেশ মাহাতোরা। তাঁদের জমিও তছনছ হয়ে গিয়েছে। কমলেশবাবু বলেন, ‘‘মহাজনের কাছে দেনা মেটাব কী করে?’’ তাঁরা সরকারি সাহায্য দাবি করছেন।

চাষিরা বলছেন, কুমরি গ্রামের প্রায় ২৫ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে যার বেশির ভাগটাই করলা। জগদীশ মাহাতো, ইন্দ্রজিৎ মাহাতোরা জানান, মরসুমি চাষ শেষ হয়ে এসেছিল। সোমবারই করলা তুলে নেওয়ার কথা ছিল। এই করলা মূলত দিল্লি, মুম্বইয়ে রফতানি হয়। চাষিদের দাবি প্রতি বিঘায় প্রায় হাজার ষাটেক টাকা লাভ হয়।

ইন্দ্রজিৎবাবু বলেন, ‘‘সরকার কী ক্ষতিপূরণ দেবে জানি না। কিন্তু আমাদের চাষের মরসুমে প্রায় ৩০ হাজার টাকা বিদ্যুতের বিল আসে সেচের জন্য। টাকাটা দিতে পারব না।’’

ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক নকুল চন্দ্র মাহাতো বলেন, ‘‘ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়েছি। এখনও খবর আসছে। আমরা ক্ষতিপূরণের জন্য কৃষি ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে জানাব।’’ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ বলেন, ‘‘এখনও সঠিক হিসেব এসে পৌঁছয়নি। আমরা ভাবনাচিন্তা শুরু করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crops Spoiled Storm
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE